রাশিদ রিয়াজ : ভারতে সম্প্রতি সরকারি তথ্য নিয়ে যেভাবে বিতর্ক দেখা গিয়েছে তাতে ওই সব তথ্য কতটা নির্ভরযোগ্য তা নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা যাচ্ছে। যেমন, বেকারত্ব নিয়ে ‘অস্বস্তির’ রিপোর্ট এলে তা কখনও ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। কখনও বা সংশোধনের সময়ে বৃদ্ধির হার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ান হচ্ছে। বিশেষত অর্থনীতিবিদ ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভারতের সরকারি তথ্যের উপর কোনও আস্থা নেই অথবা থাকলেও তা যৎসামান্য। এমন বার্তা দিচ্ছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের সমীক্ষা।
ইদানিং দু’টি ঘটনার জেরে এটা মাথাচাড়া দিয়েছে আরও বেশি করে। প্রথমত, পরিসংখ্যান মন্ত্রকের করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে তথ্যভা-ারের উপরে নির্ভর করে জিডিপি হিসেব করা হয়, সেখানে তালিকায় থাকা ৩৬% সংস্থারই খোঁজ মিলছে না তাতে। স্বভাবত প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কিসের ভিত্তিতে হিসেব করা হয়েছে জিডিপি এবং বৃদ্ধির হার? আর সেটা আদৌ ঠিক তো?
দ্বিতীয়ত হল ডিসেম্বর মাসে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয় এক রিপোর্টে যাতে দেখা গিয়েছিল, এনএসএসও ছাড়পত্র দেওয়ার পরেও নতুন কাজের সুযোগ তৈরির হিসেব প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। সেখানে উঠে এসেছিল, নোটবন্দির পরে দেশে বেকারত্ব ছিল ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।
এহেন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদ এবং বিনিয়োগকারীদের উপর সমীক্ষা চালিয়ে রয়টার্সের কাছে এমন অনাস্থার ছবি উঠে এসেছে। সাধারণত সরকারি জিডিপি এবং বৃদ্ধির হারের তথ্যকে ভিত্তি করে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু ওই তথ্য ভা-ারে আস্থা কমায় এখন বাধ্য হয়ে এরা বিকল্প সূত্র খুঁজতে বসেছে।
এদিকে আবার অ্যাবারডিন স্ট্যান্ডার্ড ইনভেস্টমেন্টসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জেরেমি লসন জানিয়েছেন, গাড়ি বিক্রি, বিমান চলাচল ইত্যাদি তথ্যকে ভর করে বিকল্প সূচক তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি তথ্যগত বিচ্যুতির ইঙ্গিত দিয়ে তার বক্তব্য, ২০১৪ থেকে কখনই সূচকে ধরা পড়েনি বৃদ্ধি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার কোনও প্রবণতা।
কারও অভিমত, চড়া বৃদ্ধির আশায় বিদ্যুতের চাহিদা লাফিয়ে বাড়বে ধরে নিয়ে উল্টে বিপদে পড়েছে সংস্থাগুলি। আবাসন ক্ষেত্রেও চলছে মন্দা। যা পরিস্থিতি তাতে শুধু দিল্লির ও রাজধানী অঞ্চলে তৈরি হওয়া প্রায় ৫ লাখ ফ্ল্যাট বিক্রি হতে ৩-৪ বছর লেগে যাবে বলে এখন শিল্পের আশঙ্কা। আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন এবং আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথও উভয়ই সরকারি তথ্যে স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলেছেন।
দ্বিতীয়ত, ডিসেম্বরে সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া এক রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, এনএসএসও ছাড়পত্র দেওয়ার পরেও নতুন কাজের সুযোগ তৈরির হিসেব প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। তাতে ছিল, নোটবন্দির পরে দেশে বেকারত্ব ছিল ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।
এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদ ও লগ্নিকারীদের নিয়ে করা রয়টার্সের সমীক্ষায় উঠে এসেছে অনাস্থার ছবি। সরকারি জিডিপি এবং বৃদ্ধির হারের উপরে ভিত্তি করে ব্যবসা ও লগ্নি কৌশল ঠিক করে বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু তাতে আস্থা কমায় এখন নিজেদের মতো করে বিকল্প খুঁজছে তারা। যেমন, অ্যাবারডিন স্ট্যান্ডার্ড ইনভেস্টমেন্টসের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জেরেমি লসন জানান, গাড়ি বিক্রি, বিমান চলাচল ইত্যাদিতে ভর করে বিকল্প সূচক তৈরি করেছেন তারা। সরকারি তথ্যে বিচ্যুতির ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ থেকে কখনও বৃদ্ধি লাফিয়ে বাড়ার প্রবণতা তাদের সূচকে ধরা পড়েনি।
আপনার মতামত লিখুন :