মোঃ ইউসুফ মিয়া, রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ীতে হঠাৎ প্রচন্ড গরমে ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ২৮ জন। বিকাল পর্যন্ত সব মিলিয়ে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিল ৪২ জন।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তথ্য মতে, হাসপাতালটি ১শ’ শয্যা থেকে আড়াইশ’ শয্যায় উন্নতীকরণ হলেও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শয্যা রয়েছে মাত্র ১০টি। যার বিপরীতে বর্তমানে রোগী ভর্তি আছে ৪২ জন। সেই হিসেবে বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছে ধারণ ক্ষমতার চারগুণ। গত এক সপ্তাহে এই হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে।
শুক্রবার বিকালে সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পা ফেলার যায়গাা নেই। কেউ মেঝেতে, আবার কেউ হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে আছে। আর রোগীর স্বজনরা প্রচন্ড গরমে হাসপাতালের সামনে থাকা একটি গাছের নীচে বসে আছে।
এ সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওয়ার্ডের মেঝেতে থাকা রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী এলাকার ফুলজান বেগম বলেন, আমি ২ দিন যাবৎ এখানে শুয়ে আছি। প্রচন্ড ডায়রিয়া হয়েছে। বার বার টয়লেটে যেতে হচ্ছে। এখানে পুরো ডায়রিয়া ওয়ার্ডের জন্য মাত্র একটি টয়লেট। সব সময় সিরিয়াল লেগে থাকে। ভীষন কষ্ট হচ্ছে।
আলেয়া খাতুন নামের অপর এক রোগী বলেন, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এসে মানুষ আরো বেশী অসুস্থ্য হচ্ছে। এই ওয়ার্ডে তেমন জানালা নেই, যে কারণে ভিতরে প্রচন্ড গরম। এছাড়া মাত্র একটি ফ্যান, তাই হাত পাখা ছাড়া কোন উপায় নেই।
কামরুল হাসান নামের এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করে বলেন, সকালে একবার ডাক্তার আসে। সারা দিনে কেউ আর খোঁজ নেয় না। হাসপাতাল থেকে কোন স্যালাইন ও ওষুধপত্র দেওয়া হয় না। এখানে এসে মানুষ আরো কষ্ট পাচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স সাবিনা আক্তার জানান, এত রোগী এক সাথে ভর্তি থাকার কারণে চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে। প্রচন্ড গরমের পাশাপাশি পঁচা-বাসী খাবার ও বাজারের ফরমালিনযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণেই ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।
রাজবাড়ী সরকারী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ শাহনিমা নার্গিস জানান, ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ইদানিং রাজবাড়ীর সব ক’টি উপজেলায়ই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সিট কম থাকায় অন্য একটি ওয়ার্ডে রোগীদের রাখা হয়েছে। এর থেকে বাঁচতে অবশ্যই খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কোনক্রমেই পঁচা-বাসী খাবার খাওয়া যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :