শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১০ মে, ২০১৯, ০৮:৪৮ সকাল
আপডেট : ১০ মে, ২০১৯, ০৮:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দক্ষিণাঞ্চলে ১০ বছরে কমেছে ১৪ হাজার একর কৃষি জমি

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল : নানা কারনে দক্ষিণাঞ্চলে কমে যাচ্ছে ফসলি জমির পরিমান। বিগত দশ বছরের ব্যবধানে এ অঞ্চলে কমে গেছে প্রায় ১ দশমিক ৯৮ একর জমি। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে কমে যাওয়ার হার পূর্বের পাঁচ বছরের তুলনায় বেশি। ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত জমির পরিমান কমেছে শুণ্য দশমিক ৯৯ একর। সংখ্যায় যার পরিমান দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ২২৬ একর।

ফসলি জমির পরিমান কমলেও কমেনি উৎপাদন। বরং বিগত ১০ বছরে দক্ষিণাঞ্চলে ধান, ডাল, সবজি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্যের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুন। ফসল ফলাতে উপশী ও হাইব্রিডসহ উচ্চ ফলনশিলজাত ব্যবহারের কারনেই কম জমিতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উদ্যান বিশেষজ্ঞ জিএমএম কবির খান।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিবছর গড়ে দশমিক দুই শতাংশ ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। সে হিসেবে গত ১০ বছরে এক দশমিক ৯৮ ভাগ ফসলি জমি কমেছে। তবে তুলনামূলক জমির পরিমান কমেছে বিগত পাঁচ বছরে। কমে যাওয়া ফসলি জমির পরিমান অন্যান্য জেলার তুলনায় ভোলা ও পটুয়াখালী জেলায় বেশি। বিগত পাঁচ বছরে এ দুটি জেলায় জমির পরিমান কমেছে এক হাজার ৫০০ একর।

এর মধ্যে ভোলা জেলায় জমির পরিমান কমেছে ছয় হাজার ৩০০ একর এবং পটুয়াখালী জেলায় কমেছে ছয় হাজার একর। পাঁচ বছর পূর্বে ২০১৪ সালে ভোলা জেলায় মোট ফসলি জমির পরিমান ছিলো এক লাখ ৯২ হাজার ৬৮২ একর। পাঁচ বছর পরে এসে সেই জমির পরিমান দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৬ হাজার ৩৮২ একর। আর পটুয়াখালী জেলায় জমির পরিমান ছিলো দুই লাখ ১৩ হাজার ৬০০ একর। তা কমে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ১৩ হাজার একরে।

এছাড়া বরিশাল জেলায় ২০১৪ সালে ছিলো এক লাখ ৭৫ হাজার ৬০০ একর। যার বর্তমান পরিমান এক লাখ ৭৫ হাজার ৫৩০ একর। কমেছে ৭০ একর। পিরোজপুর জেলায় ছিলো ৮২ হাজার ৪১৪ একর। বর্তমান পরিমান ৮২ হাজার ৩১৪ একর। কমেছে ১০০ একর। ঝালকাঠি জেলায় জমির পরিমান ছিলো ৫৪ হাজার ২৫৬ একর। বর্তমানে ফসলি জমির পরিমান ৫৪ হাজার ২০০ একর। কমেছে ৫৬ একর। বরগুনা জেলায় জমির পরিমান ছিলো এক লাখ দুই হাজার ৯৯৬ একর। তা থেকে কমে এসেছে এক লাখ দুই হাজার ৮৯৬ একরে। বিগত পাঁচ বছরে ফসলি জমি কমেছে ১০০ একর।

এদিকে ফসলি জমির পরিমান কমে গেলেও বেড়েছে ফসলের উৎপাদন। কৃষি বিভাগের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে আউশ, রোপা আমন ও বোরো ফসলের উৎপাদন হয়েছিলে ২৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫৭৩ মেট্রিকটন। ২০১৮-১৯ সালে উৎপানকৃত ফসলের পরিমান ২৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৯৩ মেট্রিকটন। গড় অনুপাতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও পটুয়াখালী জেলায় এর পরিমান কমেছে। ২০১৪ সালে ওই জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছে ছয় লাখ ৪০ হাজার ৬৮৪ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের পরিমান দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ২৮ হাজার ৪৯২ মেট্রিকটন। সে অনুযায়ী উৎপাদন কমেছে ১২ হাজার ১৯২ মেট্রিকটন।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যান বিশেষজ্ঞ জিএমএম কবির খান বলেন, জমি কমলেও প্রযুক্তির ব্যবহারের কারনে উৎপাদন বেড়েছে। তবে জমির পরিমান কমে যাওয়ায় আমাদের উপশী বা হাইব্রিডসহ উচ্চফলনশীলতাজ বীজের প্রতি নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। যার কারনে বৈরী আবহাওয়া এবং জলোচ্ছাস বা অতিবর্ষণের কারনে কৃষকদের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাওফিকুল আলম বলেন, জমির পরিমান কমে যাওয়ার কারন হিসেবে চলমান উন্নয়ন, ইমরাত, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও যত্রতত্রভাবে মালিকানাধীন স্থাপনা নির্মানকেই চিহ্নিত করা যায়। পাশাপাশি ইটভাটাকেও দায়ী করা যেতে পারে। কারণ ইটভাটার কালো ধোয়ার কারনে জসলি জমির উর্বরতা কমে যায়। যে কারনে ওই জমি ফসল উৎপাদনের জন্য কাজে আসেনা।

তিনি আরও বলেন, বিগত পাঁচ বছরের হিসেবে ভোলা ও পটুয়াখালী অঞ্চলে জমির পরিমান বেশি কমেছে। এরমধ্যে পটুয়াখালী জেলায় পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, লেবুখালীতে সেনানিবাস নির্মানে অনেক জমির প্রয়োজন হয়েছে। যেগুলো সবই ফসলি জমি ছিলো। সমুদ্র বন্দর ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে কলাপাড়া, কুয়াকাটা ও বরগুনার আমতলীর ফসলি জমিতে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে উঠছে। ফলে ওই অঞ্চলে জমির পরিমান বেশি কমেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়