বিভুরঞ্জন সরকার : আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হঠানোর নানা কসরত করে বিএনপি এবং তার মিত্ররা কেবল ক্লান্তই হয়ে পড়েনি, পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্নও হতে শুরু করেছে। দল গোছাতে গিয়ে বিএনপি আরো বেশি এলোমেলো হয়ে পড়েছে। দলের মিত্ররাও এখন সরে পড়ছে। বিশ দল ছেড়েছে আন্দালিভ পার্থর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)। লেবার পার্টি হুমকি দিয়েছে, বিএনপি যদি ঐক্যফ্রন্ট না ছাড়ে তাহলে তারা বিএনপি ছাড়বে। বিশ দলীয় শরিকদের আরো কেউ কেউ জোট ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিশ দলের ঐক্য রক্ষা করা বিএনপির পক্ষে সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রবল সংশয় আছে বিএনপি নেতাদেরই। বিএনপির নতুন মিত্র জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও ঐক্য নিয়ে সমস্যায় আছে। ঐক্যফ্রন্টে গণফোরাম এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য ছাড়া আর কারো খবর নেই। নির্বাচনের আগে কাদের সিদ্দিকী অনেক হুংকার ছাড়লেও এখন তার কোনো কথা শোনা যাচ্ছে না। ‘সময়ে সরব, অসময়ে নীরব’ আসম রব এখন রবহীন। ঐক্যফ্রন্ট আর এগুতে পারবে কিনা, বিএনপি আর এসব ‘ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা’ বহনের ক্ষমতা রাখে কিনা সে প্রশ্নও বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।
সরকার তথা আওয়ামী লীগের এখন সুদিন চলছে। বিরোধী দলে চলছে খরার কাল। সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল নেই। অথচ কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল অপরিহার্য। বিরোধী দলের কোনো নেতার কাছে দেশের মানুষের কোনো প্রত্যাশা নেই। সব কিছুর জন্যই এখন সবাই তাকিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। তিনি দেশ চালাচ্ছেন, দল চালাচ্ছেন, যেকোনো সংকটের সময় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে রাখছেন। সেজন্যই অনেকেই মনে করছেন, দেশের একটি ভালো বিরোধী দল গঠনের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি কি তা করবেন?
লেখক : গ্রুপ যুগ্ম সম্পাদক, আমাদের নতুন সময়
আপনার মতামত লিখুন :