শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ১০ মে, ২০১৯, ১২:২১ দুপুর
আপডেট : ১০ মে, ২০১৯, ১২:২১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের নতুন পাখি ‘খয়রা-লেজ চুটকি’

অশোকেশ রায় : পাখ-পাখালির দেশ বাংলাদেশে রয়েছে রেকর্ড সংখ্যক প্রায় ৭০০ প্রজাতির পাখির বিচরণ। সেই তালিকায় যোগ হয়েছে নতুন একটি পাখির নাম। সৌখিন পাখি আলোকচিত্রী নাঈম ইসলাম সম্প্রতি বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রাম থেকে পাখিটির ছবি ধারণ করেন। এরপর বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রখ্যাত পাখি গবেষক ইনাম আল হক এ পাখিটির বাংলায় নামকরণ করেন- ‘খয়রা-লেজ চুটকি’। বাংলানিউজ

ইনাম আল হকের বর্ণনামতে, এদেশে রয়েছে নানা ধরনের আরও কিছু ‘চুটকি’ বা Flycatcher জাতীয় পাখির বসবাস। তবে নতুন পাখিটির লেজ যতটা খয়েরি রঙের, ততটা আমাদের দেশের কোনো চুটকির নেই। এর ইংরেজি নাম তাই Rusty-tailed Flycatcher। এই ইংরেজি নামটিও বর্ণনামূলক। সেজন্য আমাদের দেশের অন্য ‘চুটকি’ (Flycatcher) ও ইংরেজি নামের সঙ্গে মিল রেখে এর বাংলা নামকরণ করা হয়েছে ‘খয়রা লেজ চুটকি’, যেন পাখিটির শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

তিনি জানান, খয়রা-লেজ চুটকির উচ্চতা মাত্র ১৪ সেন্টিমিটার। এরা পাহাড়ি পরিবেশে বসবাস করা পাখি। হিমালয়ে প্রজনন করে এবং শীত কাটায় দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের নীলগিরি পর্বতে। এই প্রথমবার এদেরকে বাংলাদেশে শীত কাটাতে দেখা গেল বলেও জানান তিনি।
পাখিটিকে ক্যামেরাবন্দি করা নাঈম ইসলাম বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে পাখিটির দুটি ছবি ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি যে, আমার তোলা এইRusty-tailed Flycatcher এর এ ছবিটি নতুন পাখির। পাখি গবেষকদের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রমাণিত হয়েছে, আমার ছবিই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম পাওয়া Rusty-tailed Flycatcher পাখির ছবি।’

ইনাম আল হক বলেন, ‘৩০টির মতো চুটকি (Flycatcher) বাংলাদেশে দেখা যায় এবং এরা সবাই পরিযায়ী। আমাদের দেশে শীতে তারা থাকে এবং গ্রীষ্মে ডিম পাড়তে চলে যায় উত্তরের দিকে। সবচেয়ে কাছেরগুলো তারা নেপাল-ভুটানের পাহাড়ের উচ্চতায় বাসা করতে যায়। অন্য চুটকিরা উত্তরের আরো দূরে আফগানিস্তান, ইরান ইত্যাদি দেশে চলে যায়।

‘চুটকির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- এই পাখিগুলো পরিযায়ী। পাখি। নীলগিরি পর্বত অর্থাৎ দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে সে শীতটা কাটায়। আর গ্রীষ্মে দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের শেষ মাথা অর্থাৎ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশের পর্বতের ওপরে বাসা করে ছানা ফোটায়।’

তিনি বলেন, ‘মজার বিষয় হলো- চুটকির যাতায়াতের পথে কিন্তু বাংলাদেশ পড়ে না। বাংলাদেশ তো অনেকখানি পূর্বদিকে। কারণ, পশ্চিম ভারত থেকে কাশ্মীর যেতে বাংলাদেশ হয়ে তো যেতে হয় না। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ হয়েও যেতে হয় না। তার অর্থ দাঁড়ায়-আমাদের কাছে চুটকি পাখিটির যে জানা তথ্যগুলো রয়েছে, তা অসম্পূর্ণ। অর্থাৎ, চুটকিরা শুধু পশ্চিম ভারতেই শীত কাটায় না, ওরা বাংলাদেশেও আসে।’

‘আমাদের জানা ছিল না যে-খয়রা-লেজ চুটকি’ পাখিটি শীত কাটাতে বাংলাদেশেও আসে। সুতরাং, এই পাখিটি সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। বছরের একবার এক প্রজাতির পাখির ছবিই যথেষ্ঠ নয়। পরবর্তী বছরেও ওই এলাকাগুলোতে পাখিগবেষকদের অনুসন্ধান চালাতে হবে। যদি আমরা আগামী বছরও আরো ‘খয়রা-লেজ চুটকি’ পাখি দেখি, তাহলে পাখিবিজ্ঞানে একটি নতুন তথ্য সংযুক্ত হবে যে- এই পাখিটি শুধু পশ্চিম ভারতেই শীত কাটায় না, ভারতের একদম পূর্বে এসে বাংলাদেশেও শীত কাটায়।

ইনাম আল হক বলেন, ‘এমনকি এই পাখিটিকে আসামেও পাওয়া যেতে পারে। একটি নিশ্চিত তথ্য পেলে সুবিধে হয়। তখন পাখি গবেষকরা সেই পাখিটি খুঁজতে থাকেন। কারণ এটি খুব ছোট পাখি। পাখি বিজ্ঞানী বা পাখি গবেষকদেরও চোখ এড়িয়ে যায়।

‘আমাদের তাই নতুন কাজ হলো আগামী শীত মৌসুমে এই পাখির অস্তিত্ব ফের অনুসন্ধান করা। যদি পাখিটিকে আগামী শীতেও রাজশাহীর বগুড়ায় পাওয়া যায়, তাহলে এই এলাকার নামটি সংযুক্ত হয়ে যাবে খয়রা-লেজ চুটকির আবাসস্থল হিসেবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়