রাশিদ রিয়াজ : ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেছেন, বিজেপি সরকার যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেছে তা লজ্জাজনক। বাস্তবে ভারতের অর্থনীতি মোদী শাসনামলে মন্দার বিপর্যয়কর স্তরে চলে গেছে। সাংবাদিকদের কাছে দেশটির অর্র্থনীতিকে ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে উল্লেখ করে চিদাম্বরম বলেন, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি গত মার্চে সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা আসলে বিজেপি সরকারের ‘মিথ্যা প্রচারণা’। মোদী-জেটলির ‘যুগলবন্দী’র প্রভাব ভারতের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দুর্যোগের সৃষ্টি করেছে। ব্যষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোই বলছে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি প্রকৃত তথ্যকে গোপন করে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন মাত্র। এনডিটিভি/ইকোনোমিক টাইমস
চিদাম্বরম বলেন, বিজেপি শাসনামলে ভারতের অর্থনীতির যে দুর্দশা ঘটে গেছে তা পুনরুদ্ধার করতে আগামী সরকারকে অনেক কাজ করতে হবে। এবং তার দল কংগ্রেস ভারতের অর্থনীতিকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে তৈরি আছে বলেও জানান তিনি। তিনি দাবি করেন মোদী সরকার অনেক মিথ্যা তথ্য ও উপাত্ত ব্যবহার করে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে সূচককে দেখাচ্ছে তা আদতে সঠিক নয়। এবিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত। রাজনীতিবিদরা ভয়ঙ্কর ধরনের হস্তক্ষেপ করায় সেন্ট্রাল স্ট্রাটিক্স অফিস ও ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভে অফিস ভারতের অর্থনৈতিক সূচক সম্বলিত যথাযথ তথ্য উপস্থাপন করতে পারে না। লোকসভা নির্বাচনে মোদী যতই ভারতের অর্থনীতি নিয়ে এধরনের মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করুক, ভোটাররা ঠিকই তাদের প্রতিদিনের জীবন যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে, কর্মসংস্থান হয়নি, বিনিয়োগ আসেনি, কৃষকদের ঋণে জর্জরিত হতে হচ্ছে এসব বিবেচনা করেই ভোট দেবে।
চিদাম্বরম দাবি করেন, অর্থনীতিতে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১.৬ লাখ কোটি টাকা যার ফলে প্রকৃত রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে ৩.৯ শতাংশ এবং অর্থনীতি মন্দার কবলেই যাচ্ছে। যখন কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল তখন অর্থনীতিকে পুনুরুজ্জীবিত করার জন্যে খাত ভিত্তিক উদ্যোগ নেয়া হয় এবং এর পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে একত্রীকরণ করা হয়েছিল। কিন্তু মোদীর শাসনামলে গরীব ভারতীয়রা সবচেয়ে নাজুক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর কারণ বিজেপি সরকারের অর্থনৈকি বিশৃঙ্খলা। অক্সফাম গ্লোবাল ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট উল্লেখ করে চিদাম্বরম বলেন, গত অর্থবছরে ভারতে ৭৩ শতাংশ সম্পদ চলে গেছে ১ শতাংশ ধনীর কব্জায়। একই সময়ে ৫০ শতাংশ গরিবের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১ শতাংশ হারে। তুঘলকী কায়দায় কর আরোপে মোদীকে দায়ী করে চিদাম্বরম বলেন, কর্মসংস্থান বাড়েনি বরং বেকারত্ব বেড়েছে। গত ৪৫ বছরে বেকারত্ব এখন ভারতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে ৬.১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে যা ২০১২ সালের তুলনায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :