শিরোনাম
◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করলেই ব্যবস্থা: ইসি আলমগীর  ◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি

প্রকাশিত : ০৮ মে, ২০১৯, ০৫:০০ সকাল
আপডেট : ০৮ মে, ২০১৯, ০৫:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বগুড়ায় ভয়াবহ লোডশেডিং রমজানেও পরিত্রাণ নেই মানুষের

আরএইচ রফিক, বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কবল থেকে পরিত্রাণ মিলছেনা যেন কিছুতেই। অসহ্য গরমের দাবদাহ অন্যদিকে বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিং এ জনজীবনে নেমে এসেছে দূর্বিসহ ভোগান্তি। বগুড়া বিদ্যুৎ বিভাগ (নেসকোর) কতিপয় দায়িত্বশীলদের সেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম এবং জবাব দিহিতার অভাবে বগুড়া অঞ্চলে বিদ্যুতের চরম আকাল দেখা দিয়েছে।

গরমের শুরু থেকেই অব্যাহত লোডশেডিং শুরু হলেও গত ২ দু’সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের যন্ত্রনা ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এখন নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অসহ্য গরমে যখন বগুড়ার আশপাশের এলাকার মানুষ হাঁসফাঁস করছে তখন বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন মানুষের ঘাড়ে দানবের মতো চেপে বসেছে। সরকারি আধা সরকারি ও শায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠান সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বীমা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুত মিলছেনা। বগুড়াসহ ১২টি উপজেলার শিল্প কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। বগুড়ার পিডিবি নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিতে রুপান্তরিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে লোডশেডিংয়ের এই ভয়াবহ অনিয়ম সেচ্ছাচারিতা। যার ফলশ্রুতিতে গত দু’সপ্তাহ থেকে এই খেলা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

বগুড়া বিদ্যুত বিভাগের সূত্রে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং চললেও একই বিভাগের বিভিন্ন শাখার দায়িত্বশীলদের মধ্যই এর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক একাধিক সূত্রে বলা হচ্ছে সরবরাহ কমতির কারণে রেশনিং পদ্বতিতে বিদ্যুত বিপনণ বিভাগের কয়েকটি বিভাগে তারা লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্য দিকে বিভাগের এক শ্রেণির দায়িত্বশীলরা বলছেন, লোডশেডিং নেই তবে মাঝে মধ্যে গরমের কারণে পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ রাখছেন। অর্থাৎ তারা বিভিন্ন অজুহাতে টেকনিক্যাল সমস্যা দেখিয়ে পাশ কেটে যেতে চাইছেন। অন্যদিকে বিদ্যুতের যাওয়া ও আশা এবং অন্য কোন কারনে বিভাগের অভিযোগ অনুযোগ এর বিষয়ে খোঁজ খবর করতে গেলে বিদ্যুত সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের অশালিন কথা শুনতে হচ্ছে সম্মানিত গ্রাহকদের । সময় মত তাদের টেলিফোন নাম্বারটি বন্ধ রাখা হচ্ছে, কিম্বা কোন লোক ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করতে অনিহা দেখাচ্ছেন।

উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বারখ্যাত শিল্প নগরী বগুড়া খাদ্য ও শিল্প উৎপাদনে দেশের অন্যতম একটি জেলা। এ জেলায় হাজার হাজার বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প কারখানার কারণে এই জেলাকে শিল্পাঞ্চল হিসাবে পরিগনিত হয়ে থাকে। এমন কোন শিল্প নেই যা গড়ে ওঠেনি। যে কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এই জেলায়। বিশেষ করে শিল্পকারখানায় নারী এবং পুরুষকর্ম করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবত বগুড়ায় ব্যাপক আকারে বিদ্যুতের লোডশেডিং সাধারণ মানুষসহ শিল্পকারখানার মালিকদের ভাবিয়ে তুলেছে। ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া এই জেলার খুব সাধারণ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেও এর কোন কূল কিনারা করতে পারছেন না শিল্প কারখানার মালিকরা। তাদের এক কথা যে বিদ্যুৎ তারা পাচ্ছে তা দিয়ে তারা গোটা জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। এদিকে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের ১,২ ও ৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ কেউ সাংবাদিকদের সরাসরি বিরক্ত প্রকাশ করছেন কিম্বা অধীনস্থদের দিয়ে ফোন রিসিভ করাচ্ছেন, তারা বলছেন, স্যার একটু বাইরে গেছেন।

এব্যপারে গতকাল বিদ্যুৎ বিপনণ বিভাগের একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্ত প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বাসা বাড়িও তো আছে, টেকনিক্যাল কারণে লাইন বন্ধ করলেও আপনারা ফোন করেন। প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা টেকনিক্যাল এর অজুহাতে লাইন বন্ধ করার বিষয়টি তার দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, দেখি খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবো। অর্থাৎ দিনে রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুত না থাকার বিষয়টি তিনি অবহিত ননন।

এ বিষয়ে গত কয়েক দিন আগে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুর রশিদের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ঢাকার রোড ডিসপ্যাাচ সেন্টার এর সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তাই তাদের নির্দেশে রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী বগুড়ার নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানীর বিদ্যুৎ কমিয়ে দিয়ে থাকেন । আগে কেন্দ্রীয় ভাবে পল্লী বিদ্যুৎকে ৪৫ ভাগ এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিকে ৫৫ ভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এখন উল্টে তাদেরকে আমরা সরবরাহ করছি। ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, বগুড়ার চাহিদা সময় ভেদে ৯০ থেকে ১শ’ ১২০ মেগাওয়াট বিদ্রুত প্রয়োজন। অথচ আমরা পাচ্ছি তার অনেক কম। যে কারণে তারা লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। গরমের দাবদাহে লোডশেডিং এর মাত্রা কম হবে কিনা সে বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিরক্ত প্রকাশ করে বলেই ফেলেন, লোডশেডিং হলে তিনি কি করবেন ।

এ দিকে রমজানের শুরু থেকে ভয়াবহ লোডশেডিং ও বিদ্যুতের ভোগান্তিতে নাকাল বগুড়ার সাধারণ মানুষের ভেতরে এখন তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রমজানের মাঝেও বিদ্যুতের এই অব্যাহত লোডশেডিং এর কারণে জনমেন তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এরি মধ্য একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উল্লেখ করেছেন, বিদ্যুতের লুকোচুরিতে নাজেহাল বগুড়ার মানুষ। পোষ্টে আরো অনেকেই অনেক ধরণের মন্তব্য করে লিখেছেন। বগুড়ায় বিদ্যুত বিভাগের অধিকারী কি কোন দানব বসে আছেন কি? তারা অবিলম্বে এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়