মাহফুজ নান্টু : আগামীকাল বা পরশু থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য পবিত্র এ মাস উপলক্ষে কুমিল্লার বাজারগুলোতে কাঁচা শাক-সবজি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যর দাম বেড়েছে কয়েকগুন। এতে করে রমজান মাসের ইফতার সাহরীর জন্য বাজারে আগাম নিত্য পণ্য কিনতে আসা নিম্ন আয়ের মানুষদের নাভিশ্বাস উঠেছে।দামের উর্ধ্বগতির কারনে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পন্য সামগ্রী ও কাঁচা তরকারী মাছ কিনে বাড়ী ফিরতে হয়েছে।
কুমিল্লা রাজগঞ্জ কাঁচা বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রমজান আসলেই নানান অজুহাতে নিত্য পন্যের দাম বেড়ে যায়। তবে প্রশাসনিক তদারকি থাকলে নিত্য পন্যর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকে বলে জানান ক্রেতারা।
রাজগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা যায় গোল আলু ১৮-২০ টাকা,চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা ঢেড়শ-৫০-৬০, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়ো মাঝারি সাইজের ৪০-৫০ টাকা, টমাটো ৭০-৮০ টাকা,মিষ্টি কুমড়ো মাঝারি আকারের ৪০-৫০ টাকা পিস প্রতি ২৫-৩৫ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।মাছের বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মাঝারি আকারের রুই ২৫০-২৮০ টাকা কেজী দরে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া ১৪০-১৬০ টাকা, মৃগেল ১৪০-১৫০ টাকা, শিং মাছ (চাষ করা) কেজী প্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা, দেশী শিং-৪শ-৫শষ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মাছের বাজারে ইলিশ ও গলদা ও বাগদা চিংড়ীর সরবরাহ ভালো থাকলেও দাম বাজেটের বাইরে। ইলিশ মাঝারি আকারের কেজী প্রতি ৭শ-৯শ টাকা এক কেজী ওজনের হলে ১৫শ থেকে ১৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন। গলদা ও বাগদা চিংড়ী মাঝারি আকারের ৬শ থেকে ৬৫০ টাকা বড় আকারের ১২ শ টাকা কেজী দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও দেশী ও হাইব্রিড জাতের ধনিয়াপাতা কেজী প্রতি দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা,কাঁচা মরিচের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ১০-২০ টাকা।
কাঁচা তরকারীর দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে রাজগঞ্জ বাজারের কাঁচা তরকারী ব্যবসায়ী সোহেল জানান, ঝড়সহ আরো বেশ কয়েকটি কারনে পাইকারী বাজারেই মণ প্রতি ১শ থেকে ২ শ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়াও বাজারে পাইকারী বাজারেও কাঁচা তরকারীর সরবরাহও কম। তাই দাম একটু বেশী। তবে বৃষ্টি কম হলে ১৫ রমজানের পরে কাঁচা তরকারী দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে।মাছ ব্যবসায়ী আলমগীর জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কম। আসলে রমজানের প্রথমে যে চাহিদা থাকে রমজানের মাঝে সে রকম চাহিদা আর থাকে না। তাই এখন দাম একটু বেশী থাকলেও প্রথম দশ রমজানের পর দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলে জানান মৎস্য ব্যবসায়ী আলমগীর।
এদিকে বাজারে তেল পেয়াজ,হলুদ-মরিচসহ নিত্য পন্যর দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী আতাউর জানান, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য আমদানী রপ্তানী বন্ধ থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে। যখন স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানী রপ্তানী স্বাভাবিক হবে তখন দাম সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলে জানান তিনি।
এদিকে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে কোন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যেন নিত্য পন্যর দাম নিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী না করতে পারে সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কুমিল্লা জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সাথে সভা করেছেন। সভায় ব্যবসায়ী নেতারা জানান, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে তারা জেলা প্রশাসনের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত আছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: আবুল ফজল মীর জানান, রমজানে নিত্য পন্যসহ সব রকম প্রয়োজনীয় পন্য যেন অতিরিক্ত দামে বিক্রি না হয় সে জন্য পুরো রমজান মাসেই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করবে। এছাড়াও ক্রেতা ঠকানো রোধে ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী কিংবা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের প্রতি অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :