আমিন মুনশি : মেয়েটি একাই বাসের দুটি সিট দখল করে বসে আছে। কেউ বসতে চাইলে চোখ গরম করে এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন কেউ তার বাবার দেয়া সম্পত্তির দিকে হাত বাড়াচ্ছে! পাবলিক বাসে পাশাপাশি দুই সিটে দুজন বসবে— এটাই তো নিয়ম। কিন্তু এই মেয়ে কিছুতেই সেটা মানতে রাজি নয়। তার কথা হলো, সে একাই দুজনের সিটে বসবে। কোন পুরুষ তার পাশে বসতে পারবে না। ফার্মগেট থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত এমন কাণ্ডই দেখছিলাম। শেষমেশ ইমন ভাই তাকে বললো, ‘সবচেয়ে ভালো হয় আপনি সামনে গিয়ে মহিলাদের সিটে বসুন। সেখানে কোন পুরুষ আপনার পাশে বসতে চাইবে না।’
মেয়েটি সম্ভবতঃ ইমন ভাইয়ের কথা ভালোভাবে শুনতে পায়নি। তাই আমি যথাসম্ভব জোরগলায় তাকে বললাম, ‘আপনি প্লিজ একটি সিট ছেড়ে বসুন। আমরা যারা দাঁড়িয়ে আছি আমাদের কাউকে বসতে দিন। পাবলিক সার্ভিসে এ ধরণের বিহেভিয়ার আপনার মোটেই উচিত হচ্ছে না।’
আমার কথায় মনে কাজ হলো। মেয়েটি তার ভ্যানিটি ব্যাগ গুছিয়ে ওঠে আসতে যাচ্ছিলো। হঠাৎ বাসের ঝাঁকুনি খেয়ে সামনের সিটের সাথে ধাক্কা লাগায় আবার বসে পড়লো। তারপর আমাকে সিটে বসতে ইশারা করে বাস থেকে নামতে উদ্যত হলো। আমি খেয়াল করে দেখলাম, মেয়েটি কন্ডাকটরকে দুই সিটের ভাড়াই দিলো। তারপর নামতে নামতে বললো, ‘সব পোলাপানই বদমাশ। বাসে ওঠে মনে করে বেশ্যাখানায় আসছে। খালি সুযোগ খোঁজে।’
ইমন ভাই আর আমি ততোক্ষণে সিটে বসে ক্লাসের পড়া নিয়ে আলাপ জুড়ে দিলাম। চলতে ফিরতে কতো মেয়েকেই তো আমরা সমস্যায় পড়তে দেখি। সব সমস্যার দিকে তাকানোর সময় কি আমাদের হাতে থাকে?
আপনার মতামত লিখুন :