আমিন মুনশি : -আমাদের সংগঠনে নাম লেখাও। তোমার মতো বুদ্ধিমান ছেলেদের আমরা কাজে লাগাতে চাই।
-আমার হাতে তো সময় নেই আঙ্কেল; লেখাপড়া আর পার্টটাইম জব করার পর অন্য কিছুতে মনযোগ দেয়ার কোন আগ্রহ হয় না, প্লিজ!
রোকন আঙ্কেলকে এই নিয়ে চারবার ইগনোর করলাম। কাজটা কি ঠিক হলো? হয়তো এটাই ঠিক। কারণ, উনি আমাকে যে কাজের অফার দিচ্ছেন সেখানে আসলে তেমন কোন কাজ নেই। একটা ক ইসলামি পার্টির অফিস। মাঝে মধ্যে লোকজন আসে। খাওয়াদাওয়া হয়। মিটিং হয়। কিছু জিনিস নোট করে ফাইলবন্দি করতে হয়। কম্পোজ করতে হয় কখনো কখনো। সাংবাদিক আসলে কথা বলতে হয়—মোটামুটি এগুলোই কাজ। কিন্তু আমার কেন যেন এসব কাজে কোন আগ্রহ হয় না। আল্লাহর কথা, নবী-আউলিয়ার কথা বললেও এ লোকগুলোর ব্যাপারে বিশ্বাস হতে চায় না।
শুক্রবার এলে ওনারা বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। নানান কথাবার্তা বলে লোক জমায়েত করে। তবে নিজেরা কখনও মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে ময়দানে মিছিল বের করেন না। আমার চিনতে কষ্ট হয় ওনাদের ইসলাম। আমার সন্দেহ কেবলই ঘনীভূত হয়।
২.
রোকন আঙ্কেল প্রায়ই আমাদের মহল্লায় ঘোরাঘুরি করেন। কলেজ ছাত্রদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে কী কী কথা বুঝাতে থাকেন। আল্লার রাস্তায় শহীদ হলে সোজা জান্নাতে যাওয়া যাবে ইত্যাদি। প্রথম প্রথম বিষয়গুলো ভালোই মনে হতো আমার। কিন্তু এখন কেবলই প্রশ্ন জন্মায় মনে। স্বাধীন দেশে আমরা কার বিরুদ্ধে জিহাদ করবো? কোন কোন মুসলমান হত্যা করলে বেহেশতে যাওয়া যাবে?? বাবা-মায়ের স্বপ্ন নষ্ট করলে কত নেকি অর্জন হবে আমার???
৩.
গতকাল রাতে অনলাইনে নিউজটা দেখেছিলাম। ভালো করে পড়া হয়নি। সকালে টিভিতে দেখলাম, তবুও একটা বিষয় নজরে পড়েনি। একটু আগে ইয়াছিন ভাই বললেন, দেখেন তো এই লোকটা আপনার পরিচিত কি-না। আমি দেখলাম—র্যাবের হাতে আটক পাঁচজন জঙ্গির মধ্যে রোকন আঙ্কেলও আছেন। ওনারা নাকি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের জন্য কর্মী সংগ্রহ করতেন। যেটাকে আমাদের কাছে প্রকাশ করতেন ‘জান্নাতে যাওয়ার পথ’ হিসেবে। (ফেসবুক থেকে)
আপনার মতামত লিখুন :