মুসবা তিন্নি : সম্প্রতি বাংলাদেশের ময়মনসিংহ গৌরীপুর উপজেলার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের সুযোগের উপর। বিশেষ করে ছোট শহরগুলোতে স্বাস্থ্যসেবার এমন চিত্র নিত্য দিনের। তবে উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের পরিবার নিয়ে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকা, সেই সঙ্গে পদোন্নতি পিছিয়ে পড়তে পারে এমন আশংকায় চিকিৎসকরা সেখানে থাকতে চান না বলে জানান ময়মনসিংহের বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মতিউর রহমান। তিনি বলেন, উপজেলাগুলোতে ইমারজেন্সি মেডিক্যাল অফিসারের কোন পোস্ট নেই ২জন মাত্র মেডিক্যাল অফিসার। এছাড়া প্রয়োজনীয় নার্সিং ব্যবস্থাও কম, এ্যনেস্থেটিস্ট নেই, ল্যবরেটরিতে ব্লাডের রুটিনে ইনভেস্টিগেশান, ব্লাড সুগার দেখা, কিডনি পরিক্ষার জন্য ক্রিয়েটনিন দেখা এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া তো অপারেশান করা যায় না । ওটি আছে কিন্তু ওটিতে যন্ত্রপাতি নেই , এক্সরে মেশিন আছে তবে তা প্রায় অকেজো , আল্ট্রাসনোগ্রাফ মেশিন নেই, অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও নড়বড়ে। তাহলে কেনো একজন ডাক্তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা ছাড়া উপজেলা পর্যায়গুলোতে এসে চিকিৎসা সেবা দিবেন ?
জাতীয় গণস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্ণধার ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, যতদিন প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের সুযোগ থাকবে ততদিন দেশের জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থার অবনতি ঘটতেই থাকবে। এই সমস্যাগুলো প্রধান কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকারের সুর্নিদিষ্ট নীতিমালার কারণে এই সমস্যাগুলো প্রবল আকার ধারণ করছে , সরকার দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে মুখে যা বলছেন কাজে তা করছেন না। কেবলমাত্র দেশের রাজধানিতেই ভালো চিকিৎসকে ঠাসা। এদেরকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। বিবিসি বাংলা
তবে ডাক্তার চৌধুরীর এমন বক্ত্যবের সাথে একমত হতে পারেননি স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে এখনো দশহাজার জনগোষ্ঠির অনুপাতে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২৩জন। গত বারো বছরের তুলনায় মেডিক্যাল ক্যাডারের সংখা চারগুণ বাড়লেও এখনো রোগী ও চিকিৎসকের অনুপাতে ভারসাম্য আসেনি তাই প্রাইভেট প্র্যাক্টিস সমস্যার সৃষ্টি করলেও তা এখনই তুলে দেওয়া সম্ভব নয়।
দুইমাস আগে সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছিলো । সেই রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাক্টিসের বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরিতে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা ছিলো।
আপনার মতামত লিখুন :