নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেনীর পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে পুলিশ সদর দপ্তরের তদন্ত কমিটি। রাতে কমিটি ওই প্রতিবেদন জমা দেয়। এটির অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে তাঁরা হলেন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন, উপপরিদর্শক মো. ইকবাল ও মো. ইউসুফ। প্রতিবেদনে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি এসএম রুহুল আমীন বলেন, 'যাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছি, তা তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। চাপমুক্ত থেকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হয়েছে।' মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কমিটির সদস্যরা ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ১০ পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সাংবাদিক, মাদ্রাসার কমিটি ও প্রশাসনের প্রতিনিধি মিলিয়ে অন্তত অর্ধশত জনের বক্তব্য নেন।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি তদন্ত দল স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনকে দায়ী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়- স্থানীয় প্রশাসন ও মাদ্রাসার গভর্নিং বডি যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে নুসরাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ড এড়ানো যেত। এ ঘটনায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন অবহেলা ও অপরাধ করেছেন। জেলা প্রশাসনেরও অবহেলা ছিল। তারা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। কমিশন এসব কর্মকর্তার অপরাধ ও অবহেলা বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ডিআইজি এসএম রুহুল আমীনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নুসরাতকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা যৌন হয়রানির চেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন আগেভাগেই কার্যকর ব্যবস্থা নিলে তার গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনা এড়ানো যেত। এ ঘটনায় কোনোভাবেই স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না।
এদিকে নুসরাতের যৌন হয়রানির অভিযোগের ভিডিও ধারণ এবং তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেনি পিবিআই। মঙ্গলবার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। ২৭ মে প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
আপনার মতামত লিখুন :