সমীরণ রায়: ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাতে। তিনি অনুমোদন দিলে যে কোনো দিন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কমিটির তালিকা প্রণয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
জাহাঙ্গাীর কবির নানক বলেন, যাচাই বাছাই করে আমরা ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দিয়েছি। তিনি যেদিন মনে করবেন, সেই দিন কমিটি ঘোষণা দেবেন। আমাদের হাতে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো, সেটি আমরা পালন করেছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ৩০১ জনের খসড়া তালিকা দিয়েছি। তবে এ তালিকা সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে যে কেউকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারেন, প্রয়োজনে বিয়োজনও করতে পারেন।
জানা গেছে, সংগঠনটির ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর ৩১ জুলাই সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে দীর্ঘদিন আটকে ছিলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা। সঙ্গত কারণেই গত ১৫ এপ্রিল গণভবনে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংগঠনটির কমিটি ঘোষণার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে ছাত্রলীগের বর্তমান দুই সদস্যের কমিটি ভেঙে দেওয়ারও নির্দেশ তিনি। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ৪ নেতা পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ৭দিনের আল্টিমেটাম দেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। এরই প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের খসড়া তালিকা তৈরি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেওয়া হয়। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলেই যে কোনো দিন বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের অন্যতম সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি অনুমোদন দিলেই যে কোনো দিন প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, গত ১৬ এপ্রিল আওয়ামী লীগের দায়িতপ্রাপ্ত ৪ নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৈঠক করেন। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। পরদিন ১৭ এপ্রিল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনকে ছাত্রলীগের যোগ্য নেতাকর্মীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরির তাগিদ দেন দলের কেন্দ্রীয় ৪ নেতা। সে অনুযায়ী সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দুই তালিকা মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় নিজেরা কমিটি গঠন করতে ব্যর্থ হলে ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাদ্দাম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :