সালেহ্ বিপ্লব : শিক্ষার মূলধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ৩০ হাজার মাদ্রাসাকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনবে পাকিস্তান। সোমবার রাওয়ালপিণ্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের মুখপাত্র জেনারেল আসিফ গফুর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। রয়টার্স
মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন পাকিস্তানের জন্যে একটি জটিল এবং কঠিন সিদ্ধান্ত। প্রচণ্ড রক্ষণশীল দেশটির মাদ্রাসাগুলোতে জঙ্গিবাদ শেখানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব ও ভারতের পক্ষ থেকে আগ বাড়িয়ে এ অভিযোগ তোলা হয় বারবার। কিন্তু অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় পাকিস্তানে মাদ্রাসা শিক্ষার কোন বিকল্প আছে বলে মনেও করা যায় না।
ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের নয়া সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জঙ্গিবাদ নিয়ে বেশ চাপের মুখে আছে। ভারতে ‘কথিত’ জঙ্গী হামলার পর পাকিস্তানের ওপর বিশ্বমহলের এ চাপ আরো জোরালো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেনারেল গফুর বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আরবীর পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার সব বিষয় সমন্বয় করে কারিকুলাম প্রণয়ন করা হবে। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গী তৎপরতা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তাই সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী খাত থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, পাকিস্তান এখন মরিয়া হয়ে প্রমাণ করতে চাইছে, আফগানিস্তান ও ভারতে জঙ্গী হামলাগুলোর সাথে দেশটির কোন সম্পর্ক নেই। গতমাসেই সরকার ১৮২টি ধর্মীয় স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছে। একই সময়ে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের ১০০ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
জেনারেল গফুর বলেন, আমরা চাই মাদ্রাসা শিক্ষাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে, যেখানে মাদ্রাসা থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েরা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের সমকক্ষ হিসেবে নিজেদের অবস্থান করে নেবে। আমরা পাকিস্তানে চরমপন্থী সন্ত্রাসের অবসান ঘটাতে চাই আর এটি তখনই সম্ভব হবে যখন মাদ্রাসায় পড়েও আমাদের ছেলেমেয়েরা সাধারণ শিক্ষার সমান সুযোগসুবিধা পাবে।
সরকারের এ মুখপাত্র আরো জানান, মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আর এক মাসের মধ্যেই সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। সংসদে সিদ্ধান্ত হবে মাদ্রাসার আধুনিকায়নে সিলেবাস প্রণয়ন ও শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :