ডেস্ক রিপোর্ট : সুনামগঞ্জের ছাতকে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনার বিচার না পেয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষকে ক্লাসরুমে লাঞ্ছিত করেছেন আলিম পরীক্ষার্থী এক ছাত্রী।
শনিবার সকালে উপজেলার গোবিন্দনগর ফজলিয়া ফাজিল মাদরাসায় ক্লাস চলাকালীন ঘটনাটি ঘটে। এতে মাদরাসায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী ও আলিম পরীক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারীর কার্যালয়ে ডাকা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থী পৃথকভাবে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্যে ওই শিক্ষার্থী মাদরাসার ইংরেজি শিক্ষক সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রাজিবুর রহমানকে অভিযুক্ত করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছে দু’দফা বিচার প্রার্থী হলে তিনি এর কোনো সমাধান দেননি। ফলে ওই শিক্ষার্থী চলমান আলিম পরীক্ষায় অংশ নেননি।
এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি অধ্যক্ষের সাথে এরূপ আচরণ করেছেন। অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী দু’দিন মোবাইলে বিষয়টি জেনেছেন বলে স্বীকার করে জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে গত ২৮ মার্চ মাদরাসায় একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ওই শিক্ষার্থী জানান, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে শিক্ষক রাজিবুর রহমানের বাসায় কোচিং করতে যাই। এ সময় আমার সাথে অশালীন আচরণ করা হয়েছে। নানাভাবে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন প্রলোভন দিয়েছেন ওই শিক্ষক।
এতে তিনি ৬ দিন প্রাইভেট পড়ে ওই শিক্ষকের কাছে পড়া বন্ধ করে দেন। অধ্যক্ষের কাছে এ নিয়ে বিচার প্রার্থী হলে তিনি কোনো বিচার পাননি। এজন্য লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে আলিম পরীক্ষায় অংশ নেননি ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীর বাবা থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাদরাসার ইংরেজি শিক্ষক রাজিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক রাজিবুর রহমানকে সন্ধ্যায় আটক করেছে ছাতক থানা পুলিশ। ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদা আফসারী জানান, মাদরাসা শিক্ষার্থীসহ অধ্যক্ষের বক্তব্য শুনেছি। শিক্ষার্থীকে সকল প্রকার আইনি সহযোগিতা দেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :