ডেস্ক রিপোর্ট : নড়াইলের-২ আসনের সংসদ সদস্য মাফরাফি বিন মুর্তজা আকস্মিক জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে চিকিৎসককে না পাওয়ার পর সেখানকার চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যুগান্তর।
তাদেরকে বিনা অনুমতিতে হাসপাতালে অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এ চার চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
চিকিৎসকরা হলেন- নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আখতার হোসেন, কার্ডিওলজির জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. শওকত আলী ও ডা. রবিউল আলম এবং মেডিকেল অফিসার ডা. এ এসএম সায়েম। রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই চিকিৎসকদের ওএসডি করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে বৃহস্পতিবার সাড়ে ৩টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফর করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
নারী ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যার কথা শোনেন। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি।
সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ২ জন নার্স দেখে তাদের ডিউটির ব্যাপারে খোঁজখবর নেন।
হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স থাকলেও ১-২ জন নার্স দিয়েই বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিচালিত হচ্ছে। ঘটনা শুনে নিচে নেমে এসে নার্সিং সুপারভাইজারদের খোঁজ করেন মাশরাফি।
নার্সদের কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে টেলিফোনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় একজন সুপারভাইজারের ফোন বন্ধ এবং অপরজনের ফোন খোলা থাকলেও তিনি রিসিভ করেননি।
হাসপাতালের সংক্রামক ওয়ার্ডে গেলে সংসদ সদস্যকে কাছে পেয়ে রোগীরা নানা অভিযোগ করেন।
‘বাইরে থেকে স্যালাইন কিনে আনতে হয়’- এমন অভিযোগ শুনে তিনি হাসপাতালের বাইরের দোকানগুলোয় সরকারি স্যালাইন বিক্রি করা হয় কি না, তা দেখার জন্য নির্দেশ দেন।
হাসপাতালের ওষুধ সংকটের বিষয়ে স্টোরকিপারকে ডাকেন। তাকে না পেয়ে রাতে আবার সভা করবেন বলে বেরিয়ে যান।
একই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সিভিল সার্জন, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করেন এমপি মাশরাফি।
এ সময় তার সঙ্গে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ছাড়াও হাসপাতালের অবকাঠোমো দেখভাল করা প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত সবার কাছ থেকে পাওয়া নানাবিধ অভিযোগ এবং নিজের দেখা অনিয়মের ব্যাপারে তিনি সবার সঙ্গে রূদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
এ সময় হাসপাতালের নানা অনিয়মের মধ্যে বাইরের অ্যাম্বুলেন্স, দালাল ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের কঠোরভাবে দমনের নির্দেশ দেন। তিনি হাসপাতালকে মানুষের সেবার জন্য উন্মুক্ত করতে বলেন।
আপনার মতামত লিখুন :