স্মৃতি খানম : আমি প্রথমে ‘ঢাকা মেট্রো’র গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে চেয়েছিলাম। এজন্য প্রযোজকদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছি। কিন্তু নানা বিধি-নিষেধের কারণে এ গল্পটি নিয়ে সিনেমা বানানোর সাহস করিনি। এরপর ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ‘হইচই’-এর পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সবকিছু ব্যাটে-বলে মিলে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিলাম এ গল্পটি নিয়ে ওয়েব সিরিজ বানানোর। আমাদের নাগরিক জীবনে বিচ্ছেদ ও একাকীত্বের বিষয়টি রূপকাশ্রয়ী, কিন্তু বস্তুনিষ্ঠ গল্পের মাধ্যমে ওয়েব সিরিজটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সূত্র: সমকাল
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় আট-দশটা টিভি নাটকের চেয়ে ‘ঢাকা মেট্রো’র কন্টেন্ট অনেকটাই আলাদা। ডার্ক কমেডি ও থ্রিলারের সমন্বয়ে দর্শক একটি ভিন্ন স্বাদ খুঁজে পাবে। এছাড়া ওয়েব সিরিজের ধারণাটি আমাদের মিডিয়া জগতে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তাই এর দৃশ্য ধারণ ও সার্বিক আয়োজনে বেশ বৈচিত্র্য ছিলো। এটি নির্মাণের জন্য এর অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে শুটিং ইউনিটের প্রতিটি মানুষ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে দিনাজপুর ও তার আশপাশের অঞ্চলে প্রতিদিন ভোরে কনকনে ঠা-ার মধ্যে শুটিং করতে হয়েছে।
১৭ এপ্রিল থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গায় এর দৃশ্য ধারণ শুরু হয়েছে। প্রথম লটের কাজ এখানে শেষ করার পর ঢাকায় ফিরে পরবর্তী দৃশ্য ধারণের কাজ শুরু করবো। আয়নাবাজির পর দর্শকের প্রত্যাশার কথা মাথায় রেখেই দ্বিতীয় ছবি নির্মাণের জন্য কিছুটা সময় নিয়েছি। গত এক বছর ধরে গবেষণার পর ছবির কাজ শুরু করলাম। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ছবির গল্প, চরিত্র ও শুটিং লোকেশন নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক করেই কাজটি শুরু করলাম। আশা করছি আরও টানা দুই মাস শুটিং করবো।
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এই ছবির গল্প। এতে আরও তুলে আনা হবে ঐতিহ্যবাহী রিকশা পেইন্টিংও। নাঈমা নামের একজন মেয়েকে নিয়ে ছবির গল্প এগিয়ে যায়। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অসুস্থ বাবার রিকশা নিয়ে পুরুষ বেশে রাস্তায় বের হয় নাঈমা। এর বাইরে আর কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে এটুকু বলি, আশা করি দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে একটি ভালো ছবি দেখতে পাবে।
আমি সবসময়ই বলি সিনেমায় সৎ গল্প বলতে হবে। আমাদের পরিবার, সমাজ ও বাংলাদেশের মানুষের গল্প সিনেমায় আনতে হবে। তা না হলে দর্শক হলে আসবে না। দর্শকের চাহিদার মূল্য না দিয়ে দর্শক কেমন গল্প পছন্দ করে, কী দেখতে চায় তা যাচাই-বাছাই না করে অন্ধের মতো ছবি নির্মাণ করলে তো হবে না। আমাদের দেশের সিনেমা দর্শক উন্মুখ হয়ে থাকে ভালো একটি ছবি হলে বসে দেখার জন্য, কিন্তু তাদের সেই আকাক্সক্ষা কী আমরা পূরণ করতে পারছি? আমরা আমাদের মতো গল্প বলার চেষ্টা করছি এবং জোর করে দর্শককে হলে আনার চেষ্টা করছি। একটা সময় আমাদের পরিবারের আনন্দময় সময় কাটতো দলবেঁধে হলে বসে সিনেমা দেখে। পুরনো সেই রীতি এখন প্রায় ¤্রয়িমাণ।
কারণ একদিকে যেমন আমরা প্রত্যাশিত গল্প ও নির্মাণের ছবি দিতে পারছি না অন্যদিকে সিনেমা হলের পরিবেশও সুন্দর, সুস্থ, স্বাভাবিক রাখতে পারছি না। সিনেমা শুধু ব্যবসা করার জন্য লগ্নি না করে প্রযোজনা করতে হবে। আমাদের এখানে একজন প্রযোজক সবকিছু করেন। কিন্তু প্রযোজকের তো সবকিছু তত্ত্বাবধান করা ঠিক নয়। সার্বিক ব্যবস্থাপনা একটি প্রতিষ্ঠান করবে। একজন প্রযোজকের নেতৃত্বে পুরো টিম কাজ করবে। ভালো ছবি নির্মাণে তরুণদের বিশ্বাস করতে হবে। তাদের প্রতি ভরসা রাখতে হবে। অধৈর্য হলে চলবে না। তরুণদের সময় দিতে হবে। গত কয়েক বছরে আমাদের তরুণদের নির্মিত বেশকিছু সিনেমা শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :