সাইদুর রহমান : মাহে রমজান সমাগত। মানব জাতির জন্য শ্রেষ্ঠ মাস। পূর্ণাঙ্গভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মুমিন বান্দা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারে। আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর (রমযানের) রোযা ফরয করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের উপর ফরয করা হয়েছিল। যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার। -সূরা বাকারা (২) : ১৮৩
শরয়ী ওযর ছাড়া ইচ্ছাকৃত একটি রোযাও পরিত্যাগ করা নিকৃষ্ট পাপ। দ্বীনের মৌলিক ফরয লংঘনকারী এবং ইমান ও ইসলামের ভিত্তি বিনষ্টকারীরূপে পরিগণিত হবে। আর এ কারণে সে রোযার যে মঙ্গল ও বরকত থেকে বঞ্চিত হবে কস্মিণকালেও তার ক্ষতিপূরণ করতে পারবে না।
এমনকি এ রোযার কাযা করে নিলেও তা ফিরে পাবে না। হাদীস শরীফে এসেছে- যে ব্যক্তি কোনো ওযর বা অসুস্থতা ব্যতিরেকে রমযানের একটি রোযা পরিত্যাগ করবে সে যদি ঐ রোযার পরিবর্তে আজীবন রোযা রাখে তবুও ঐ এক রোযার ক্ষতিপূরণ হবে না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭২৩
রোযার ইতিবৃত্ত
রোযা এমন একটি ইবাদত, যা বাহ্যত কষ্টকর হলেও তার প্রচলন ছিল সর্বকালে। হযরত আদম আ.-এর যুগ থেকে শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সকল নবীর উম্মতের উপরই তা ফরয ছিল। -রূহুল মাআনী ২/৫৬
অবশ্য পূর্ব যুগে রোযার ধরন ছিল বিভিন্ন প্রকৃতির। রোযা রাখার পদ্ধতির ভিন্নতা ছাড়াও ফরয রোযার সংখ্যাও বিভিন্ন রকম ছিল। প্রাথমিক অবস্থায় উম্মতে মুহাম্মদীর উপরও কেবলমাত্র আশুরার রোযা ফরয ছিল। রমযানের রোযার ফরয বিধান আসার পর আশুরার রোযা ফরয হওয়ার হুকুম রহিত হয়ে যায়। -মাআরিফুস সুনান ৫/৩২৩
উল্লেখ্য, রোযা ফরয হয় হিজরতের দেড় বছর পর, ১০ শাবানে। রোযা ফরয হওয়ার পর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোট ৯টি রমযান পেয়েছিলেন।
তাছাড়া নিরেট চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য বছরের কিছু দিন অবশ্যই পানাহার বর্জন করা উচিত। এটি স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। তাই হিন্দু-খ্রিস্টান সকল ধর্মেই রোযার মতো উপবাস করার প্রচলন রয়েছে। (যদিও ইসলামের রোযার সাথে সেসব উপবাসের পদ্ধতিগত কোনো মিলই নেই)। (আরকানে আরবাআ : ২৬৪)