জাবের হোসেন : রোহিঙ্গা সংকট ঘিরে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)।
সংঘাতের আগাম পূর্বা ভাসদাতা ব্রাসেলসভিত্তিক এই আন্তঃদেশীয় সংস্থার এশিয়াবিষয়ক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমারে ফেরার সম্ভাবনা নেই। দূর ভবিষ্যতেও বড় পরিসরে তাদের প্রত্যাবাসনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এমন প্রেক্ষাপটে ঘোর অনিশ্চয়তা নিয়ে আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সামলানোই বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কালের কন্ঠ।
পূর্বাভাসে আইসিজি বলেছে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বাংলাদেশের। শিবিরগুলোয় জঙ্গিসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী ধরাছোঁয়ার বাইরে ও বেপরোয়াভাবে ক্রমেই সক্রিয় হয়ে উঠছে। তারা শান্তিপ্রিয় ব্যক্তি ও তাদের নেতাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য রোহিঙ্গা শিবিরগুলোয় নিয়মিত ও কার্যকর পুলিশি উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং অপরাধের তদন্ত ও অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।
বাংলাদেশকে সতর্ক করে আইসিজি বলেছে, এসব ইস্যু এখন নিষ্পত্তি করতে না পারলে তা দীর্ঘ মেয়াদে শরণার্থীদের (রোহিঙ্গা) ক্ষতির কারণ হবে এবং সম্ভবত এটি বাংলাদেশের এই অংশে অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতাকে উসকে দিতে পারে। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোয় হত্যাসহ বিভিন্ন সহিংসতা মূলত রাতেই ঘটে। অপরাধীরা খুব কমই আইনের আওতায় আসে। এটি রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতিকে আরো বিষিয়ে তুলেছে।আইসিজি বলেছে, এ মাসে তারা এমন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতার সঙ্গে কথা বলেছে যাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে আরসা। তাঁরা এখন বেশ ভয়ে আছেন। পশ্চিমা অনেক দেশের মতো আইসিজিও রোহিঙ্গা শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ না থাকার বিষয়টি আমলে নিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গা শিবিরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ দেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গোষ্ঠীর আগ্রহ ও সক্ষমতা আছে বলেও উল্লেখ করেছে আইসিজি।রোহিঙ্গাদের অনির্দিষ্টকাল বাংলাদেশে থাকার সম্ভাবনার প্রতি ইঙ্গিত করে আইসিজি বলেছে, যদিও এই বোঝাগুলোর কিছু বাংলাদেশ এড়াতে পারবে না, তবুও দাতারা বাংলাদেশের ওপর অন্তত অর্থনৈতিক প্রভাব কমানোর উদ্যোগ নিতে পারে এবং এই উদ্যোগ তাদের নেওয়াই উচিত। আইসিজি আরো বলেছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের প্রভাব যদি আরো বিরূপ না হয় তবে দাতা দেশগুলোর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য বার্ষিক মানবিক সহায়তা আবেদনেই সাড়া দেওয়া নয়, ঢাকার বিধিনিষেধ প্রত্যাহার সাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদি সহায়তায়ও এগিয়ে আসা উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :