সৌরভ নূর : ২৬ এপ্রিল গণভবনে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে এক বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম, কিন্তু ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রচ- অনীহা লক্ষ করা যাচ্ছে। অন্যদিকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করতে চাইলেও তারা রাজি হচ্ছে না যেতে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের সাবেক আইজিপি নুরুল আনোয়ার বলেন, একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে এক কোটিরও বেশি লোককে পাশ^বর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলো। সে কথা আমরা ভুলতে পারি না। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা এসেছে বারো লাখের বেশি। আমরাও তাদের মানবিক কারণেই আশ্রয় দিয়েছি, কিন্তু এখন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না করতে পারলে আমাদের জন্য নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তারা নিতে পারেনি, বিদেশিদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারকে তাদের দেশের নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করতে পারেনি। আন্তর্জাতিক মহল মানবতার কথা উচ্চারণ করলেও বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের বোঝা বইতে হচ্ছে। এই বোঝা আর কতোদিন বাইতে হতে পারে তা এখন অনিশ্চিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কূটনৈতিক তৎপরতাই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর সর্বোত্তম মাধ্যম। কিন্তু চীনের বাধার মুখে সফল হতে পারেনি।
অন্যদিকে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতও এখানে তেমন কোনো সহযোগিতা করেনি। তবে এতোদিনে এটা বোঝা গেছে চীন যদি না চায় তাহলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে না। কেননা মিয়ানমারের উপর চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ভালো সম্পর্ক থাকলে যখন মিয়ানমারের সঙ্গে তুলনা করা হয় তখন চীনের কাছে বাংলাদেশের তুলনায় মিয়ানমারের গুরুত্ব বেশি হয়ে দাঁড়ায়। এখানে প্রথমত অর্থনৈতিক কারণ, অন্যটি রাজনৈতিক কারণ। রাজনৈতিকভাবে মিয়ানমার হচ্ছে এ অঞ্চলে চীনের জানালা। আর অর্থনৈতিক একটা ব্যাপকতা তো রয়েছেই। তাই চীন যতোদিন না ইতিবাচক হচ্ছে, ততোদিন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না বলে আমি মনে করি।
আপনার মতামত লিখুন :