সুজন কৈরী : সড়ক দুর্ঘটনায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্যের মৃত্যুর ঘটনায় তাকে বহনকারী রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের মোটরসাইকেল চালক সুমনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২৫মিনিটে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ের একটি বাসার ষষ্ঠ তলা থেকে তাকে আটক করা হয়। এছাড়া ওই বাসার গ্যারেজ থেকে লাবণ্যকে বহনে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও (ঢাকা মেট্রো হ ৩৬-২৩৫৮) উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় উবার চালক সুমনও আহত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে যান। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় তিনি ভুল ঠিকানা উল্লেখ করেন। উবার চালক হিসেবে রেজিস্ট্রেশনের সময় ও কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সময় তার দেয়া ঠিকানা সঠিক নয়। বর্তমানে সুমন পুলিশের তত্ত্বাবধানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে বিপ্লব কুমার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ গেটে অবস্থানকালে লাবন্য উবারে রিক্যুয়েস্ট দেন। এরপর পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে সুমন তাকে ফোন দেন। লাবন্য খিলগাঁও ছায়াবিথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাসার সামনে যেতে বলেন। সুমন পৌঁছালে লাবন্য তার বাইকে উঠেন। রাস্তায় যানজট ছিল। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি পৌছামাত্র একজনকে লোককে বাইকের সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হতে দেখে সুমন বাইকে ব্রেক কষে। ফলে লাবন্য মোটর বাইকের ডানদিকে পড়ে যান। এ সময় একটি কার্ভার্ড ভ্যান পেছন দিকে ধাক্কা তাকে দেয়।
বিপ্লব কুমার বলেন, বাইক চালক সুমনের বক্তব্যে যাচাইয়ের পাশাপাশি বাইক চালক হিসেবে তার অবহেলা বা ইচ্ছাকৃত ভুল থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘাতক কাভার্ড ভ্যানটি শনাক্তসহ এর চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি জানান, ময়নাতদন্তের পর লাবণ্যের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার দফানও হয়েছে। লাবণ্যের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা এমদাদুল হক বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে মামলা করেছেন। তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলের বিপরীত পাশে থাকা একটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানে কাভার্ড ভ্যান চাপা দেয়ার দৃশ্য অস্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তবে ভ্যানটির নম্বর দেখা যায়নি। ওসি বলেন, উবার চালকের মাথা, হাত ও পায়ে আঘাত রয়েছে। পুলিশ হেফাজতে তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :