নিজস্ব প্রতিবেদক : হোক সেটা ঘরোয়া তবুও সেটাকে স্বপ্নময় টুর্নামেন্ট জহুরুল হকের জন্য। যেখানে প্রথম সাতটি ইনিংসে তার রান ছিল-১২১*, ৪৫, ১৪, ৯৬, ১৩০, ২৫, ৯১*। যা যেকোন ব্যাটসম্যানের কাছেই লোভনীয়। বলছিলাম সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ পারফর্ম করা জহুরুল ইসলাম অমির কথা। এমনকি টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়েই জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক তার ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন।
প্রথম সাত ম্যাচে নজর কাড়লেও পরের ৪ ইনিংস অবশ্য ভালো যায়নি জহুরুলের, করেছেন মাত্র ৩৮ রান। তবে শেষ দুটি ইনিংসে ৭৫ ও ১০০ রান করে ভালোভাবেই সমাপ্তিরেখা ছুঁয়েছেন আবাহনীর হয়ে প্রিমিয়ার লিগ খেলা এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ১৫ ম্যাচে ৫৬.৫৩ গড়ে ৩ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে করেছেন ৭৩৫ রান, প্রিমিয়ার ডিভিশনে এটিই জহুরুলের সর্বোচ্চ।
পুরো লিগে রান সংগ্রহে জহুরুল অবশ্য আছেন চারে। তবে তার ব্যাটিংয়ের ধরন, লম্বা ইনিংস খেলার চেষ্টা, ব্যাটিং বিপর্যয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে এগোনো, দলকে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে দেওয়া মুগ্ধই করেছে নির্বাচকদের। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল কদিন আগে কথায় কথায় তাই বলছিলেন, ‘ও এবার খুব ভালো করছে। দেখি ওকে দিয়ে একটু চেষ্টা করতে হবে।’
মান কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিচারে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স দেখেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো খেলোয়াড়কে সুযোগ দেওয়ার একটা ঝুঁকি আছে। ২০১৩-এর মে মাসে জিম্বাবুয়ে সফরের পর জহুরুল আর জাতীয় দলে খেলেননি। ৭ টেস্ট, ১৪ ওয়ানডে ও ৩ টি-টোয়েন্টিতে আপাতত সীমাবদ্ধ তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। জাতীয় দলের চৌকাঠ পেরোনোর আগে ৩২ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যানকে তাই পেরিয়ে আসতে হবে আরেকটা সিঁড়ি।
ভবিষ্যতে কী হবে না হবে, সেটি নিয়ে অবশ্য ভাবছেন না জহুরুল। তবে ‘এ’ দলের মতো প্ল্যাটফর্ম যদি পান, সেটি কাজে লাগাতে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করবেন। আপাতত তিনি খুশি, পুরোনো একটা রোগ থেকে অনেকটা সেরে উঠেছেন, ‘ইনিংসের শুরুর চেয়ে ইনিংসের মাঝে আউট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বল যেহেতু পুরোনো হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে সেট হয়েই আউট হয়ে যেতাম। ওটাই কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি গত দুই বছর। গত দুই বছরে ভালোই হচ্ছে, সেট হয়ে গেলে মোটামুটি ভালো রান হয়। এখন ভাবনা থাকে যেদিন উইকেটে সেট হয়ে যাই, যেন উইকেট দিয়ে না আসি। এবারও যে আউট হইনি, তা নয়। তবে এ প্রবণতা অনেকটা কমে এসেছে।’
জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্নটা এখনো জমিয়ে রেখেছেন। এবার আবাহনী তো ছিল আরেকটা ‘জাতীয় দল’। মাশরাফি-মিঠুনদের সঙ্গে খেলে জহুরুলের জাতীয় দলে ফেরার তাড়নটা যেন তীব্র হয়েছে, ‘জাতীয় দলের একটা আবহ ছিল আমাদের ড্রেসিংরুমে। মাশরাফি (বিন মর্তুজা) ছিল। বর্তমান দলের অনেকেই ছিল। একটা সময় বেশ কিছুদিন জাতীয় দলে খেলেছি। আমার অনেক ভুল ছিল। এ কারণে লম্বা সময় খেলতে পারেনি। তবে যত দিন ক্রিকেট খেলব, যদি ফিট থাকি এবং ভালো করতে পারি, আশা করতেই পারি ফেরার (জাতীয় দলে)। এ আশা নিয়েই সবাই খেলে। চেষ্টা করছি উন্নতি করার। উন্নতি না করলে তো ঘরোয়া ক্রিকেটেই টিকতে পারব না।’
আপনার মতামত লিখুন :