শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৩৪ দুপুর
আপডেট : ২৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৩৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পথশিশুদের শিক্ষায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

সৌরভ নূর : সদা সরব, ব্যস্ত, চঞ্চল গাবতলী বাসস্ট্যান্ড। কেউবা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন, কেউবা ফিরছেন কর্মস্থলে। সবাই যেন দৌড়ের ওপর। এর মধ্যেই মূল কাউন্টারের ভেতর এককোণে মেঝেতে পলিথিনের চট বিছিয়ে দেয়ালে একটি ছোট হোয়াইট বোর্ড ঝুলিয়ে একদল কোমলমতি ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাদান করছেন একজন শিক্ষিকা। দেখেই বোঝা যায় তারা ছিন্নমূল পথশিশু। মেঝেতে বিছানো চটের ওপর বসে কয়েকজন মিলে নামতা পড়ছে, কেউ ছবিতে রং করছে, কেউবা এককোণে নিশ্চিন্তে শুয়ে আছে।

জানা গেলো একটি বেসরকারি সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েকজন ব্যক্তির উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে এই খ-কালীন পথশিশুদের স্কুল। এখানে গাবতলী এলাকা এবং পাশ্ববর্তী এলাকার ভাসমান ছিন্নমূল পথশিশুদের দিনের একটা সময় একত্রিত করে প্রাথমিক শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলা ও একটি ন্যূনতম জীবন ধারণের শিক্ষা, পদ্ধতি ও উপদেশ দেয়া হয়। নামতা শেখার আসরে বসে থাকা বাবলু নামে ৭-৮ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী জানায়, সে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের আশপাশে বসে জুতা সেলাই ও কালির কাজ করে। যা আয় করে তাতে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বাকিটা পরিবারকে দিয়ে সহযোগিতা করে। সে যদি উপার্জন না করে তবে তার পরিবারের আর্থিক সংকট প্রবল হয়ে উঠে। ফলে পরিবার তাকে স্কুলের চেয়ে কাজে পাঠাতেই বেশি আগ্রহী। কিন্তু বাবুলের আগ্রহ থাকায় সে আশপাশে কাজ করে এবং নিয়মিত স্কুলে আসে। সে পড়ালেখা করতে চাই, বড় হতে চাই। মানুষ হয়ে ওঠার জন্য সহযোগিতা চায়।

পাশে দাঁড়িয়ে প্রায় একঘণ্টা ধরে তাদের পাঠদান কার্যক্রম দেখে বেশ আগ্রহী হয়ে একজন শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, বাবলুর মতো প্রায় সবাইকে কোনো না কোনো কাজ করতে হয় নিজের প্রয়োজনে এবং পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে। ফলে তারা সময়-সুযোগ ও প্রণোদনা পাচ্ছে না, তাদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে না। যেহেতু এখানে বিনামূল্যে পড়ালেখা করানো হয় মাঝে-মধ্যে দুপুরের খাবার দেয়া হয়। খেলাধুলার সুযোগ ও সরঞ্জাম, রং-পেন্সিল দেয়া হয়, কখনো গল্প শুনিয়ে ওদের এখানে আসতে আগ্রহী করে তুলতে হয়েছে। কিন্তু উপার্জনের তাগিদে অনেকেই নিয়মিত আসতে পারে না। তবে যারা আসে আগ্রহ থেকে নয়, এখানে এসে সময় কাটাতে ভালো লাগে তাই আসে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় একার পক্ষে আহামরি কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। তবে যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং শহরের বিত্তবান শ্রেণির মানুষেরা এগিয়ে আসেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে শিশু শ্রমের বিপরীতে একটা বড় প্রতিরোধ ও দ্রুত পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে বলে আমার মনে হয়।

গাবতলীর এই ভাসমান প্রতিষ্ঠানটি ছাড়াও আমার জানামতে সারা ঢাকা শহরে এ রকম বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা রয়েছে যারা এভাবেই চুপিসারে ছিন্নমূল পথশিশুদের নিয়ে নীরবে কাজ করে চলেছে, আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে অন্ধকারগামী পথশিশুদের মাঝে। তাদের প্রত্যেকের প্রতি রইলো প্রাণঢালা অভিনন্দন, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আসুন আমরা প্রত্যেকেই পথশিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হই। শিশুশ্রম মুক্তি পাক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়