সৌরভ নূর : সাভারের রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ছয় বছর পূর্ণ হলেও দুর্ঘটনার শিকার জীবিত শ্রমিকদের ৫১ শতাংশ এখনো কর্মহীন। শ্রমিকরা শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতার কারণেই কাজ করতে পারছেন না। এছাড়াও দুর্ঘটনার পরে ঘোষিত শ্রমিকদের জন্য পোশাক খাতে উন্নয়নে যেসব উদ্যোগের কথা বলা হয়েছিলো, তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। অন্যদিকে শ্রম আইনে দায়ের করা ১১টি মামলা এখনও শ্রম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ছয় বছরে দাঁড়িয়ে আমাদের আত্মজিজ্ঞাসা করতে হয় আমরা কতোটুকু এগিয়েছি, আদৌ আমরা এগিয়েছি কিনা? ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি প্রসঙ্গে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের আইনি প্রক্রিয়া এতোটাই দুর্বল গোটা দুনিয়াকে নাড়া দিলো, কিন্তু আমাদের দেশের মালিক শ্রেণি ও সরকারকে নাড়া দিতে পারলো না। এখনও একজন শ্রমিক কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তাকে পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয় না এবং অবহেলার কারণে মালিকের কী শাস্তি হবে সেটাও এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি আমাদের শ্রম আইন। রানা প্লাজার এতো বছর পার হয়ে গেলো অপরাধী কে সেটি প্রমাণ করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হয়নি। এরপরেও যতোগুলো দুর্ঘটনা আমরা দেখেছি, লক্ষ করা গেছে উদ্ধার তৎপরতাতে আমরা এখনো সেই জায়গাতেই রয়ে গেছি।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি থেকে আমাদের যে শিক্ষাগুলো নেয়া দরকার ছিলো প্রথমত দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের শাস্তি, নিহত-আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ তাদের চিকিৎসার দায়ভার গ্রহণ করা, এছাড়া দুর্ঘটনার মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভবনে প্রস্তত রাখা। পাশাপাশি সর্বদা সর্বোচ্চভাবে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কেননা ভবনে ফাটল দেখার পরেও শ্রমিকরা কাজে যেতে বাধ্য হয়েছিলো। কাজে না আসলে চাকরি থাকবে না বলে মালিক পক্ষ থেকে হুমকি দেয়া হয়েছিলো। জীবিকার তাগিদে স্বল্প মজুরির ফাঁদে পড়ে সেদিনও শ্রমিকরা কাজে যেতে বাধ্য হয়েছিলো, কারণ তাদের পক্ষে কথা বলার মতো কোনো ট্রেড ইউনিয়ন ছিলো না বলে।
আপনার মতামত লিখুন :