কেএম নাহিদ : রাজধানীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) বলছে, গত বছরের চেয়ে এবার ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। যার মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ আবার তীব্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ আছে শিশু। ইতিমধ্যেই বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে মহাখালির আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে মূল ভবনের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে অতিরিক্ত শয্যা পেতে ডায়রিয়ার চিকিৎসা চলছে । ঋতুবৈচিত্রের পলাবদলে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে পানির চাহিদা বাড়ছে, বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিচ্ছে এবং খাবার দ্রুত বাসি হয়ে পড়ছে। গরমে অতিষ্ঠ মানুষ রাস্তাঘাট ও ফুটপাথে অস্বাস্থ্যকর শরবত পান করছে। আর এসবের ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রেডিও তেহরান
হাসপাতালের প্রধান অধ্যাপক ডা. আজহারুল ইসলাম খান বলেন, দেশে বর্তমানে ডায়রিয়ার পিক মওসুম চলছে। বছরে মার্চ-এপ্রিল এবং আগস্ট-সেপ্টেম্বরকে ডায়রিয়ার পিক সিজন ধরা হয়। এবারের পিক সিজনে গত সপ্তাহের শেষ দিন থেকে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়েছে। যাত্রাবাড়ী, তেজগাঁও ও বাড্ডা এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছে। ওইসব এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ। বিপুলসংখ্যক নিম্ন আয়ের লোক বসবাস করে সেখানে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পয়লা বৈশাখের পর থেকে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। রোদে বাইরে ঘোরাঘুরি ও পথে ঘাটে খোলা খাবার ও আস্বাস্থ্যকর পানি পান করার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হবার সংখ্যা বেড়েছে। এ ছাড়া গরমে ঘাম শরীরের মধ্যে বসে গিয়ে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডাক্তার মাহবুব বলেন, গরমে নিরাপদ পানির অভাবে এবং খোলা ও বাসি খাবার খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়রিয়া হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন খাওয়ানো এবং অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ছয় মাসের বেশি বয়সী ডায়ারিয়া আক্রান্ত শিশুদের মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি ওরস্যালাইন, রাইস স্যালাইন, দেশীয় মাছ, কাঁচাকলা ভর্তা, থানকুনি পাতার রস, ডাবের পানি খাওয়ানোর পরমার্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। প্রয়োজন ছাড়া গরমে শিশুদের বাইরে বের না করা এবং বাইরের খাবার না খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজশাহী, পাবনা, যশোর, রাঙামাটি ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে এখন মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকা সহ এর প্রভাব বিস্তার লাভ করতে পারে। এ অবস্থায় জনসাধারণকে ডায়েরিয়ার আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকগণ।
আপনার মতামত লিখুন :