কামরুল হাসান : গত ২৮ বছরে জীর্ণতা কাটতে শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে হলগুলোতে চলতে থাকা প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতার অনেকটা অবসান হয়েছে। হলগুলোতে খাবারের মান পরিবর্তন, রিডিং রুমের সুন্দর পরিবেশ, হলের আবাসন সমস্যা ও গণরুমের কষ্ট অনেকটা কমতে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে সবথেকে বেশি সফল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর শামসুন্নাহার হল।
শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, আমাদের হল সংসদের ১৩ জন সদস্যের সবাই আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। এজন্য আমরা গত এক মাসে সকলের কাছে অনুকরণীয় হতে পেরেছি। ইশতেহারে দেয়া সবগুলো শর্ত আমরা পালন করতে চাই, আমাদের কাজের যা গতি তাতে আমরা তা করতে পারবো বলে আশা করি। হলের প্রতিটি ছাত্রী আমাদের সহোযোগিতা করছে পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও হল প্রশাসনের ভ’মিকাও প্রশংসনীয়।
শামসুন্নাহার হল সংসদের এজিএস ফাতিমা তাহসিন বলেন, আমাদের হলে আগে পলিথিনের অনেক ব্যবহার ছিলো যা বন্ধ করা হয়েছে। হলের গেইট রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা, খাবারের জন্য নতুন প্লেট কেনা, হলের ভেতরের স্টোরে কাঁচা বাজারসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম নির্ধারণ করে দেয়া, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতিমধ্যে। সবথেকে বড় অর্জন আমাদের হলের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাত্রীবান্ধব আচরণ নিশ্চিত করে তাদের দৌরাত্ম্য কমানো।
ফাতিমা তাহসিন আরো বলেন, এখন সবথেকে বড় সমস্যা হলো হল থেকে অছাত্র বের করা। আবাসিক ও অনাবাসিক মিলিয়ে আমাদের ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৩৭০০। এর মধ্যে ১৮০০ ছাত্রীর থাকার ব্যবস্থা থাকলেও অছাত্রদের সেটাও থাকতে পারছে না। ছাত্রলীগ ও ডাকসু থেকে অছাত্রদের বের করে দেয়ার নোটিশ তাদের হলে এখনো যায়নি বলেও জানান তিনি। হল ফা-ের টাকার ব্যপারেও প্রশাসন মুখ খুলছে না। আবাসিক সমস্যা সমাধান ও অন্যান্য ব্যয়ের ব্যাপারে তারা অগ্রসর হতে পারছে না বলেও জানান তিনি।
শামসুন্নাহার হলের আবাসিক ছাত্রী আনিকা মাহজাবিন বলেন, ডাকসু নির্বাচনের পরে আমাদের হলে প্রশাসনের দৌরাত্ম্য অনেকটা কমেছে। পাশাপাশি ডাইনিংয়ে খাবারের মানে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। আগে ডইনিং রুমের একপাশে বসে পড়তে হতো এখন আমাদের একটি সুন্দর রিডিংরুম হয়েছে। হলের গেইট এবং কেন্দ্রীয় পাঠাগার রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখার কারণে আমরা চাইলে পাঠাগারে বসে পড়তে পারছি।
হল সংসদ নির্বাচন ছাত্রছাত্রীদের মানসিক ও সার্বিক উন্নয়নের গতিকে যে ত্বরান্বিত করতে পারে তার প্রমাণ শামসুন্নাহার হল। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে ডাকসু নির্বাচন কতোটা প্রয়োজন সেটাও দেখিয়ে দিলো তারা।
আপনার মতামত লিখুন :