শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ০৯:২৮ সকাল
আপডেট : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ০৯:২৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ধ্বংসের মুখে কক্সবাজারের বন, কারণ রোহিঙ্গা ক্যাম্প

আহমেদ শাহেদ : রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারের বন ও জীববৈচিত্র্য যে ধ্বংসের মুখে রয়েছে, তা আবারও উঠে এসেছে সম্প্রতি দুটি পৃথক গবেষণায়। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, কক্সবাজারে রয়েছে টেকনাফ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, হিমছড়ি ও ইনানী জাতীয় উদ্যানের মতো জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা। কিন্তু ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আসার পর সেখানকার দুই হাজার হেক্টর বন ধ্বংস হয়েছে।

এই রোহিঙ্গারা আসার আগেও সেখানে মিয়ানমারের এই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর আরও ৩ লাখ মান্ষু অবস্থান করছিলেন। ফলে নতুন-পুরাতন মিলে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার চাপে এখন বিপর্যস্ত কক্সবাজারের পরিবেশ।

গত দেড় বছরে আসবাব তৈরি এবং জ্বালানির জন্য ছোট-বড় হাজার হাজার গাছ কাটা হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায়। কক্সবাজার বন বিভাগের এক গবেষণা বলছে, উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় বন ধ্বংসে ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা, যদিও এর পরিবেশগত ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি।

সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স সাময়িকীতে এ বিষয়ে ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং পরিবেশ’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লিখেছেন ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অ্যাপ্লায়েড ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশন রিসার্চ ল্যাবের পরিচালক শরীফ আহমেদ মুকুলসহ সাত পরিবেশ বিশেষজ্ঞ।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, কুতুপালং ক্যাম্পের বিস্তৃতির কারণে বিশ্বব্যাপী বিপদাপন্ন এশিয়ান হাতির একমাত্র করিডরটি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ওই ক্যাম্পের পশ্চিম প্রান্তে আটকা পড়েছে প্রায় ৪৫টি হাতি।

এসব কারণে সেখানে মানুষ আর হাতির মধ্যে সংঘাত বেড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত হাতির হামলায় অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণহীন জ্বালানি কাঠ সংগ্রহের কারণে অবশিষ্ট হাতিগুলো রয়েছে শঙ্কার মধ্যে। শরীফ আহমেদ মুকুল বলেন, বন ও গাছপালা ধ্বংস, মাটি ক্ষয়ে যাওয়া আর ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করছে।

এ ছাড়া বর্তমানে রোহিঙ্গারা হরহামেশা বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে আর বিভিন্ন জলজ সম্পদ সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। তা জলজ উদ্ভিদ ও পরিবেশকেও চাপের মধ্যে ফেলছে। ঘরের ও বাইরের বিভিন্ন আবর্জনা ফেলার কারণে পানিদূষণ হচ্ছে ভয়াবহ মাত্রায়। একই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ পানিতেও সেটা প্রভাব রাখছে। কারণ খুব অল্প সময়েই এত বড় সংখ্যক রোহিঙ্গা এখানে পাড়ি জমিয়েছে।

রোহিঙ্গা বসতির কারণে কক্সবাজার এলাকার পরিবেশ ধ্বংস নিয়ে আরেকটি যৌথ গবেষণা করেছে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইসিসিসিএডি) এবং ইন্টান্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্র্যান্টস (আইওএম)। গবেষণায় বলা হয়, সমতল ভূমির সঙ্গে মাঝারি পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় উখিয়া ও ইনানী বন এলাকার টপোগ্রাফি বা ভূসংস্থান বৈচিত্র্যময়। সেখানকার প্রায় ১০ শতাংশ ভূমিতে বন্যার পানি আসে এবং সেটি বালি এলাকা।

একই সঙ্গে পরিবেশ যতটুকু না দিতে পারে, তার চেয়ে অনেক জ্বালানি কাঠের চাহিদা আছে সেখানে, যা বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড়ের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিতে পারে। ইতিবাচক পরিবর্তন বড় আকারে বন ধ্বংস হতে থাকলেও আইসিসিসিএডির জরিপে জ্বালানিতে কাঠ ব্যবহার কমার চিত্র উঠে এসেছে।

এতে দেখা যায়, এক বছর আগে ৮০ শতাংশ মানুষ প্রধান জ্বালানি হিসেবে কাঠ এবং ২০ ভাগ মানুষ গ্যাস ব্যবহার করত; কিন্তু বর্তমানে প্রধান জ্বালানি হিসেবে গ্যাসের ব্যবহার করছে ৩৯ শতাংশ রোহিঙ্গা। যদিও প্রধান জ্বালানি হিসেবে এখনো কাঠ রয়েছে ৬০ শতাংশের কাছে। তাদের কেউ কেউ কেরোসিনও ব্যবহার করছে। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য রোহিঙ্গাদের বিকল্প জ্বালানির দিকে উদ্বুদ্ধের পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। পাশাপাশি পতিত ও অব্যবহৃত জমিতে দ্রুত বর্ধনশীল গাছ রোপণের পরামর্শও তাদের জন্য।

সূত্র : আমাদের সময়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়