জুয়েল খান : নারী নির্যাতন এবং হত্যার বিচার শেষ না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে থানা থেকে তদন্ত করে সেই তদন্ত টাকা খেয়ে কিংবা চাপের কারণে প্রভাবিত হয়ে দুর্বল প্রতিবেদন দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন নারী নেত্রী খুশী কবির। তিনি বলেন, থানা থেকে যেভাবে এজাহার লেখা হয় সেইটার প্রেক্ষিতে এফআইআর করা হয় বা তদন্ত প্রতিবেদন করা হয় এবং এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হয়। কিন্তু থানায় টাকা খেয়ে বা অন্য কোনো কারণে মামলার এজাহার একটু এদিক-ওদিক করে তদন্ত প্রতিবেদন লেখে। সেই প্রতিবেদন দেখে কোর্ট যদি সমবেদনা না দেখায় তাহলে বা ফাঁকফোকর যদি থাকে তাহলে মামলা চলতে থাকে।
ধর্ষণের ক্ষেত্রে পুলিশ মেডিকেল চেকআপের জন্য দেরিতে পাঠায় যাতে আলামত দুর্বল হয়ে যায়। এই কারণে মেডিকেল এভিডেন্স কিছুটা দুর্বল হওয়ায় নিশ্চিত হওয়া যায় না যে, ধর্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া সাক্ষী উপস্থাপনের ক্ষেত্রে স্থানীয় থানার একটা ভূমিকা আছে যেটা তারা টাকা খেয়ে কিংবা বিভিন্ন চাপের কারণে গাফিলতি করে। তিনি জানান, আমরা চাই কোর্ট তার নিজের গতিতে চলুক, কিন্তু সেভাবে কোর্ট চলে না। কোর্ট অনেকভাবে প্রভাবিত হয়। সেখানে সময় অনেক দীর্ঘমেয়াদি করা হয়। অন্যদিক কোর্টকে জিজ্ঞাসা করলে বলে যে, আমাদের হাতে এতো মামলা জমা হয়ে আছে, আমরা কী করবো। অন্যদিকে কোর্টের পেশকার যারা এই মামলা সামনে নিয়ে আসবে তারা টাকা পয়সার বিনিময়ে সময় দীর্ঘায়িত করতেই থাকে। সুতরাং এতোগুলো কারণ ভর করে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার উপরে।
অনেক সময় এই মামলাটা একদম ঝিমিয়ে যায় এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। ভুক্তভোগীরা মামলা চালাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কারণ হচ্ছে তাকে বিচার পেতে টাকা খরচ করতে হয় এবং সামাজিকভাবে তাকে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকার সম্মুখীন হতে হয়। তাই এই মামলাগুলো একটা বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এবং দ্রুত ট্রাইব্যুনাল করতে হবে। যেখানে সময়সীমা বেঁধে দিতে হবে। কিন্তু এখানে একটা সীমাবদ্ধতা হচ্ছে, বিচারক বলবে তারা যদি নিশ্চিত না হয় তাহলে কীভাবে একজনকে ফাঁসির আদেশ দেবে। এভিডেন্স দুর্বল হলে সেক্ষেত্রে বিচারক যদি নিশ্চিত না থাকে তাহলে বিচারক ফাঁসির আদেশ দেবে না। তখন অনেক সময় মামলা নষ্ট করে ফেলে।
আপনার মতামত লিখুন :