মাহফুজুর রহমান : রেখার স্বামী গারমেস করে, সেও আগে করতো তবে বাবুটা হবার পরে আর করে না। অনেক যতœ নেয় বাবুটার। কী ফুটফুটে সুন্দর হইছে, অবিকল বাপের মতো। মাই খাওয়ায় আর এক হাত দিয়ে বাবুটার মাথা আদর করে দেয়! ভাবনার রাজ্যে ডুবে যায় রেখা। বাপের মতো চাকরি নয়, অনেক লেখাপড়া করাবে, ছেলে বড় চাকরি করবে। সম্বিত ফিরে পেলো অনেক পরে তার ছোট বোন কেয়ার ডাকে। কেয়াও গাজীপুরে গারমেস করে, সকালেই এসেছে, বিকেলেই চলে যাবে।
আপা, রান্নাবান্না তো হইসে, কী ভাবতাছ? বাবু তো ঘুমাইছে, যাও গোসল করো। রেখা দেখে বাবু গভীর ঘুম, শোয়াইয়া রেখে কেয়াকে দেখতে বলে গোসল করতে যায়। কেয়া ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ এমন কইয়া বাবুটাকে আদর করে দিলে বাবুটা ঘুমে যায়। রেখা অনেক সময় ধরে গোসলখানায়, বের হবার নাম নাই , বাবুর জন্য রেখা অনেকদিন ধরে ঠিকমতো গোসল করতে পারেনি, আজ কেয়া এসেছে তাই আচ্ছা করে ডলামলা দিয়ে শান্তিমতো গোসল করছে। বড় বোনের আস্তে দেরি হওয়াতে সেও ঘুমিয়ে পড়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবু চিল্লাইয়া উঠছে, কেয়া ঘুম থেকে উঠে কোলে নিয়ে দোল দিয়েও লাভ হইতেছে না। কাঁদছে। ইতোমধ্যেই রেখা গোসল সেরে আইছে।
কেয়া কইল, আপা আমি থামাইতে পারছি না, বাবুর মনে হয় খিদা লাগছে, তাড়াতাড়ি মাই দাও। খিদা লাগছে তয় আমিও জানি, তুই মাই দে, কী কও আপা! হ ‘ঠিকই কইছি, কান্না তো থামতো! বলেই রেখা খিলখিল করে হেসে উঠলো, সেই সঙ্গে ছোট বোন কেয়াও! হ ‘রে, আমি মরে গেলে ওরে তুই দেখবি, আদর করবি, সৎ মা হবি না! তাইলে আমি কব্বর থেইকা অভিশাপ দিমু। বাবুটাকে কোলে নিয়ে রেখা মাই দেয়া শুরু করতেই কান্না থেমে গেলো, কেয়া এসব শুধুই দেখে আর ভাবে। কিরে কেয়া, তুই দেখি হাবুরামের মতো দেখতাছ! যা, ভাত বাড়, তরকারি বাড়। বাবু আবার ঘুমাবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :