শিরোনাম
◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ জিয়াউর রহমানের সময়ই দেশে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ০৪:১০ সকাল
আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ০৪:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

একচ্ছত্রবাদ : সমাজ ও সংস্কৃতি

অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার : বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহিম। মানুষ সামাজিক জীব এ নিয়ে কোনো বির্তক নেই বরং বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত প্রতিপাদ্য। মানুষ প্রকৃতিগত আচরণ ব্যাখ্যা করলে মোটা দাগে তিনটি আচরণ প্রলক্ষিত হয়। যথা : ১. স্বভাবগতভাবেই মানুষ ব্যক্তিকেন্দ্রিক যা নিজ স্বার্থভিত্তিক (ঝবষভ ওহঃবৎবংঃবফ), ২. মানুষ সমাজ সচেতন (ঝড়পরধষষু ঈড়হপবৎহবফ) অর্থাৎ সমাজের চাওয়া না চাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়, ৩. অন্য একটি শ্রেণি রয়েছেন যারা পরিবেশের মাধ্যমেই নিজেকে (ইষধহশ ঝষধঃবং) সীমাবদ্ধ রাখে। মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যাচাই হোক, বাহ্যিকভাবে মানুষ সমাজকে ডিঙ্গিয়ে চলতে পারে না। তবে ব্যতিক্রম যারা তারা অসামাজিক বা সমাজবহির্ভূত হিসাবে চিহ্নিত যদিও এতে তাদের কিছুই আসে-যায় না। সমাজ তার নিজস্ব সংস্কৃতির উপর নির্ভরশীল। সংস্কৃতি (ঈঁষঃঁৎব) বলতে সাধারণত আমরা মানুষের বিনোদনকে মনে করি।

প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন অর্থাৎ বছরের পর বছর স্বতঃস্ফূর্ত অনুশীলনে একটি ‘গোষ্ঠী’ বা এলাকা বা জাতির নিজস্ব আঙ্গিকে গড়ে উঠাই সে গোষ্ঠী, এলাকা, সমাজ বা জাতির নিজস্ব সংস্কৃতি হিসাবে স্বীকৃত। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব হলেও নিজ স্বার্থকে অধিক মাত্রায় প্রাধান্য দেয় বলেই বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। একই পরিবারে বসবাস করেও কেউ চলতে চায় ওহফরারফঁধষ (নিজ) ঈধঢ়ধপরঃু নিয়ে এবং কেউ চলছে ঈড়ষষবপঃরাব (সমষ্টিগত) ঈধঢ়ধপরঃুতে। ওহফরারফঁধষ এবং ঈড়ষষবপঃরাব-এর সংঘাতে গোটা সমাজ ব্যবস্থা বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয় যার ঈযবপশ ইধষধহপব রক্ষা হচ্ছে শুধুমাত্র সামাজিক সংস্কৃতির মাধ্যমে। যেখানে ব্যক্তিস্বার্থ অর্থাৎ ওহফরারফঁধষহবংং প্রাধান্য পাচ্ছে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, অন্যদিকে সমষ্টিগত ঈড়ষষবপঃরাবহবংং প্রাধান্য পাচ্ছে সেখানে ব্যক্তির পাশাপাশি গোটা সমাজ উপকৃত হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা বা নীতিমালা সমষ্টিগত চিন্তার পক্ষে, কিন্তু যাদের হাতে রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব তারা ‘ব্যক্তি’ ওহফরারফঁধষ স্বার্থ সংরক্ষণে নিজেকে নিয়ে বিভোর। ব্যক্তি চিন্তার (ওহফরারফঁধষ) প্রতিফলন যখন দেয়াল টপকে জনগণের নিকট প্রকাশ পায় বা ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ হওয়ায় জনস্বার্থ যখন বাধাগ্রস্ত হয় তখন সূত্রপাত হয় লড়াই-সংগ্রামের। কোন মানুষ ব্যক্তিকেন্দ্রিক নীতিতে বিশ্বাসী হলেও তাকে কারো না কারো উপর নির্ভর করতে হয়। ইংরেজিতে উবঢ়বহফবহপু (নির্ভশীলতা) এর পাশাপাশি ঈড়-ফবঢ়বহফবহপু (সহ-নির্ভশীলতা) নামে দুটি শব্দ আছে যার যোগসূত্র সমাজের প্রতিস্তরে দেখা যায়।

কিন্তু মানুষের মধ্যে এর উপলব্ধি অনেক সময়ই দেখা যায় না বা অনেক সময় ব্যক্তিকেন্দ্রিক মানুষগুলো ঈড়-ফবঢ়বহফবহপু-এর সূত্র স্বীকার করতে চায় না। তারা মনে করে যে, সে নিজের গুণাবলীতেই গুণান্বিত বা তার নিজস্ব স্বীকারতার কারণে সমাজে তার মাথা অনেক উঁচু পর্যায়ে। ‘একচ্ছত্রবাদ’ অন্যান্য গুণাবলীর সঙ্গে একচ্ছত্রবাদ মানুষের একটি বৈশিষ্ট্য, তবে সকলের ক্ষেত্রে নয়। যারা একচ্ছত্রবাদে বিশ্বাসী তারা পৃথিবীর সকল সম্পদকে নিজের সম্পদ মনে করে তা নিজ আয়ত্তে আনার জন্য ব্যাকুল ব্যতিব্যস্ত থাকে, এর বাস্তবায়নের জন্য ‘হত্যা’ ‘গণহত্যা’ থেকে শুরু করে পৈশাচিক কোনো কাজ করতে বিবেক তাদের বাধা দেয় না।

পৃথিবীতে যুগে যুগে রাজা, বাদশা, স¤্রাট, বিভিন্ন উপাধিদের ‘একচ্ছত্রবাদ’ মানসিকতার কারণে অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ হয়েছে, হত্যাযজ্ঞ হয়েছে লাখো কোটি মানুষের, নিজ ভিটাবাড়ি ছাড়া হয়েছে লাখো কোটি জনতা শুধুমাত্র ক্ষমতাকেন্দ্রিক ব্যক্তির এক একচ্ছত্রবাদ মানসিকতার কারণে, এটাকে একটি মানসিক রোগও বলা যেতে পারে। পৃথিবীর সব সম্পদ নিজের করার মানসিকতা বা অন্যের সম্পদ দখলের প্রতি লোভ রোগ ছাড়া আর কী হতে পারে? লেখক : কলামিস্ট ও আইনজীবী (অ্যাপিলেট ডিভিশন)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়