শিরোনাম
◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত

প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ০৭:০৪ সকাল
আপডেট : ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ০৭:০৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষাজীবন স্মরণীয় একটি বিতর্ক অনুষ্ঠান এবং কিছু কথা

আলী রীয়াজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষার্থী জীবনের যেসব অবিস্মরণীয় স্মৃতি আছে তার একটি হচ্ছে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠান। ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ সালের একটি বিতর্ক অনুষ্ঠান। আজকে অকস্মাৎ সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছে টরেন্টো প্রবাসী বন্ধু আব্দুল হালিম মিয়া। সেই স্মৃতির পেছনে আছে আরও অনেক কিছু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষার্থী জীবনের সূচনা হয়েছিলো ১৯৭৮ সালের ১ জানুয়ারি। পরের বছরগুলোতে ক্লাসরুমের শিক্ষার পাশাপাশি রাজনীতি, সাহিত্যচর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িয়েছিলাম প্রতিটি মুহূর্ত, আমার শিক্ষালয় কেবল ক্লাসরুম ছিলো না, লাইব্রেরি ছিলো নাÑছিলো বটতলা, মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি, ছিলো রাজপথ, বন্ধুদের আড্ডা, গফুর মিয়ার ক্যান্টিন। সেই জীবনের একটি বিশেষ দিক ছিলো বিতর্ক চর্চা। এখনকার মতো বিতর্ক চর্চা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। দেশের একমাত্র টেলিভিশন হচ্ছে বাংলাদেশ টিভি, তার আকর্ষণীয় এবং দর্শকপ্রিয় অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতা’। সন্ধ্যাবেলা প্রচারিত হয়, তার প্রযোজক নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের হয়ে আমরা যারা বিতর্কে অংশ নিয়েছি তার মধ্যে ছিলেন এম এম আকাশ, শাহ আলম সারওয়ার, কবির মোহাম্মদ আশরাফ আলম, সিনহা এম এ সাঈদ। ফজলুল হক হলের দলে আমরা তিনজন ছিলামÑএসএম সোলায়মান, কামাল চৌধুরী এবং আমি। দলনেতার দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্য বর্তায় আমার ওপরে। টেলিভিশনের বাইরে বিতর্কচর্চা সীমিত বললেও বাড়িয়েই বলা হয়। সেসময়ে কাওসার চৌধুরী গড়ে তুললো বিতর্ক সংঘ। একেবারে অবিশ্বাস্য এবং অসাধ্য সাধনের চেষ্টা। ক্যামেরাপাগল কাওসার চৌধুরী নিজেও বিতার্কিক, কিন্তু সংঘের এই কর্মকা-ে তার সহযোগী হাতে গোনা। এতে উৎসাহ জোগান টিএসসির পরিচালক জামান স্যার। হঠাৎ করেই বিতর্ক সংঘের উদ্যোগে বলা যায় কাওসারের উৎসাহে ও ছোটাছুটিতে আয়োজিত হলো একটি বিতর্ক। স্থান টিএসসি মিলনায়তন। সময় সকাল এগারোটা, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৮১। বিষয় : ‘তিরিশোর্ধ বয়সই জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়’। একপক্ষে শিক্ষক, অন্যপক্ষে শিক্ষার্থী। প্রস্তাবের পক্ষে শিক্ষার্থীরা, বিপক্ষে শিক্ষকরা। এমন একটা বিতর্কের কথা কেন ওর মাথায় এসেছিলো কাওসারই তা বলতে পারবে। সেই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ডাকসুর সহসভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না শিক্ষার্থীদের একজন, দলনেতা। আকাশ ভাই তখন বিতার্কিক হিসেবেই কেবল পরিচিত নয়, ছাত্র ইউনিয়নের নেতা এবং মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত ও প্রিয়। আমার সৌভাগ্য শিক্ষার্থী দলের একজন হিসেবে অংশ নেয়ার। শিক্ষকদের প্রতিপক্ষ হচ্ছি সেটা ভেবেই মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা। নাম শুনে ভিমড়ি খাওয়ার জোগাড়Ñ অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। টিএসসির মিলনায়তন কানায় কানায় ভরে উঠলো, যতোদূর মনে পড়ে অনুষ্ঠান শুরুর আগেই বারান্দায় মাইকের ব্যবস্থা করতে হলো উদ্যোক্তাদের। বিতর্কের শেষে অসংখ্য দর্শকের ভিড় ঠেলে কলা ভবনে ফিরে শুনলাম, কোনো কোনো ক্লাস বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীরা গিয়েছিলেন বিতর্ক অনুষ্ঠানের শ্রোতা হতে। কতোটা সময় চলে গেছে তারপর। আজ হঠাৎ করে হালিম তার দেয়ালে সেঁটে দিলো তার সেদিনের ডায়েরির পাতাÑ ‘দারুণ জমেছিলো এবং খুব উপভোগ্য হয়। অত্যন্ত গরম সহ্য করেও অনেক ছাত্র সমাগম ছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি এভাবেই জীবনের সঙ্গে মিশে আছে। অনেক কথাই বলা হয় না, অন্যদের স্মৃতির পাতা মেলে ধরলে টের পাইÑ‘জীবন গেছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার।’ ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়