শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:৫০ দুপুর
আপডেট : ১৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:৫০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছাত্রদল পুনর্গঠনের রোডম্যাপ, কাল সিদ্ধান্ত দেবেন তারেক রহমান

সালেহ্ বিপ্লব : ঘুরে দাঁড়ানোর প্রয়োজনে ছাত্রদলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে যে সব সমস্যা রয়েছে, তার মধ্যে প্রধানতম হলো নেতৃত্বের জট। ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই নানামুখী চাপের কারণে বিএনপির মতো ছাত্রদলও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়মিত রাখতে পারেনি। মেধাবী ও যোগ্য অনেক নেতা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে পারেননি, বয়স বেড়ে গেলেও কেউ পরীক্ষা না দিয়ে, কেউ বা নামকাওয়াস্তে এডমিশন নিয়ে ছাত্রনেতা হিসেবে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।

সর্বশেষ ৭৩৬ জনের কমিটি করেও ত্যাগী ও মেধাবী নেতাদের সবাইকে যথাযোগ্য পদ দিতে পারেনি ছাত্রদল। এই কমিটির বয়সও ৫ বছর পার হয়ে গেছে। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয় ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। এমনই একটা অবস্থায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাত্রদল পুনর্গঠনের রোডম্যাপ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ছাত্রদলের সাবেক শীর্ষনেতা, যারা বিএনপিতে সক্রিয় আছেন, তাদের সবাইকে সাথে নিয়ে ছাত্রদল পুনর্গঠনের রূপরেখা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

বেশ কিছু প্রাথমিক বৈঠক শেষে গত সপ্তাহে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সাথে বৈঠকে বসেন ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপি নেতারা। বৈঠকে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী। ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের কয়েকজনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ছাত্রদল আমাদের নেতৃত্ব তৈরির কারখানা। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদলে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সংকট দেখা দিয়েছে। এটা সব দলেই হয়, জোয়ার-ভাটা থাকে। তবে ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরির জন্য ছাত্রসংগঠনের দিকে বিশেষ নজর দিতে হয়, আমরাও সেই পথ অনুসরণ করি। তিনি বলেন, আমরা যারা ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আছি, আমরা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে বসেছি। সংগঠনকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর দীর্ঘমেয়াদী একটি রোডম্যাপ নিয়ে আমরা কথা বলেছি। ছাত্রনেতাদের কথা শুনেছি, আমাদের পরামর্শও তাদের জানিয়েছি। আশা করছি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার এই প্রক্রিয়া সফল হবে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান জানান, আমরা প্রাথমিক কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিছু বিষয়ে একমত হতে না পারায় সেসব নিয়ে আলোচনা এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি জানান, এ বছরেই দু’বার বদলাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। এ মাসের শেষে বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। এ মাসে সম্ভব না হলে রোজার আগে অবশ্যই। এই কমিটির দায়িত্ব ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন।

রোজার আগেই যে কমিটি হবে, সেটি আহ্বায়ক কমিটি হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সভাপতি বলেন, পূর্ণাঙ্গ না আহ্বায়ক, সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। প্রাথমিক যে রূপরেখা তৈরি হয়েছে, তাতে দুটো অপশনই রাখা আছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই এই সিদ্ধান্তটি ফাইনাল হয়ে যাবে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই বৈঠকে ছাত্রনেতাদের বয়সসীমা নিয়েও কথা বলেছেন অনেকে। কেউ চাইছেন ২৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী নিয়মিত ছাত্রদের নেতৃত্বে আনা হোক। অনেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। বয়সসীমা নির্ধারণের যারা বিরোধিতা করেছেন, তারা এবারের ডাকসু নির্বাচনের উদহারণ দিয়েছেন।

বর্তমান কমিটির একজন সম্পাদক বলেন, ২৮ বা ৩০ এ ফিক্স করে দিলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করার মতো নেতা খুঁজে পাওয়া যাবে কি না, সন্দেহ আছে। ডাকসুতে হল সংসদসহ ২৩৭ পদের মধ্যে ছাত্রদল প্রার্থী দিতে পেরেছিলো মাত্র ৫৪ পদে। এই ৫৪ জনের মধ্যে অন্তত ২০ জন ছিলেন, যারা কখনোই ছাত্রদলের কোনো ইউনিটের কমিটিতে ছিলেন না। সমর্থন করেন, এমন অনেককে নমিনেশন দিয়েও আমরা ৫৪ জনের বেশি প্রার্থী পাইনি।

আবার ৬ মাস মেয়াদে যে কমিটি হবে, তার গঠন প্রক্রিয়া নিয়েও ভিন্নমত এসেছে। বর্তমান কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্টরা ওই কমিটিতে মর্যাদার সাথে মূল্যায়িত হওয়ার দাবি রেখেছেন। এই দাবির বিরোধিতা করেছেন বর্তমান কমিটির বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে থাকা নেতারা। তাদের বক্তব্য, পরবর্তী কমিটিতে এই কমিটির সিনিয়রদের সবাইকে রাখা হলে প্রমোশনের জন্য অপেক্ষমান নেতাদের অবমূল্যায়ন হবে।

তবে এসব কিছু দ্বিমত সত্ত্বেও খসড়া রোডম্যাপ নিয়ে সর্বশেষ ওই সভায় মোটাদাগে ঐকমত্য হয়েছে। কিছু বিষয়ে একাধিক মতামত বা ভিন্নমত এসেছে, সেসব মতামতও প্রস্তাব আকারে খসড়ায় রাখা হয়েছে। এই খসড়া এরই মধ্যে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার এই খসড়া রোডম্যাপ নিয়ে ছাত্রদলের দায়িত্বে থাকা বিএনপি নেতাদের সাথে স্কাইপেতে কথা বলবেন তারেক রহমান। তার সিদ্ধান্ত জানার পর পরই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। সম্পাদনা : মো. তৌহিদ এলাহী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়