সালেহ্ বিপ্লব : চৈত্রের শেষেই বোরো ধান ঘরে তুলতে শুরু করেছেন জেলার কৃষকরা। বৈশাখের মাঝামাঝিতেই ফসল তোলার তাগিদ তাদের। কারণ কালবৈশাখী ঝড় কিংবা শিলা বৃষ্টির কবলে পড়লে তাদের স্বপ্নের সোনালী ধানের ক্ষেত লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। বাসস বাংলা
বোরো ধান চাষী আবু ছিদ্দিক মনা বলেন, এ বছর প্রায় ২ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। মৌসুমের শুরুতে সেচের পানি সংকট ছিল। তবে আমার ব্যক্তিগত শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি সংকট নিরসন করে যথাসময়ে জমিতে আবাদ করতে পেরেছি। তাছাড়া সঠিকভাবে ফসলের পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার করায় ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কেটে মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছি। আশা করি, কালবৈশাখী ঝড়ের আগেই ধান ঘরে তুলতে পারবো।
চাষী বেল্লাল হোসেন বলছেন, সেচের পানি সংকটের কারণে গত বছরের তুলনায় ফলন কিছুটা কম হবে। তবুও খুশি যে, ঝড় ও শিলা বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেই পাকা ধান ঘরে তুলতে পারছি। এ বছর প্রায় ১ একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন বলেও জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচী ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের আওতায় লক্ষ্মীপুর সদর, রামগঞ্জ, রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় মোট ২৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের ধান চাষ করা হয়। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৯৮ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চাল।
এদিকে বোরো মৌসুমের শুরুতে জেলার প্রধান স্লুইস গেইট অচল থাকার কারণে সেচের পানির সংকটে পড়ে অধিকাংশ চাষী দেরীতে চাষাবাদ শুরু করেন। যার ফলে পাকা ধান ঘরে তুলতে হলে ওইসব চাষীদের বেশ কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো চাষীরা ভালো ফলন প্রত্যাশা করছেন। ইতোমধ্যে চাষীদের কেউ কেউ পাকা ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন। তবে দেরীতে চাষাবাদের কারণে অধিকাংশ জমির ধান এখনো পাকেনি। যার ফলে কৃষকরা কিছুটা শঙ্কিত। কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির কবলে না পড়লে আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে তারাও পাকা ধান ঘরে তুলতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই কর্মকর্তা।
আপনার মতামত লিখুন :