রমজান আলী : ভালো নেই রাষ্ট্র মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক। গত কয়েক বছর ধরেই নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এই ব্যাংকটি এখন নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। টাকা ধার করে ও মূলধন ভেঙে দৈনন্দিন কাজ চালাতে হচ্ছে, একই সঙ্গে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। বড় ধরনের লোকসানেও পড়েছে জনতা ব্যাংক। তবে এর পরিত্রাণ পেতে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
মামলার ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েছে জনতা ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ব্যাংকের মোট মামলা এখন দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৩৮৬টিতে। এ মামলায় আটকে আছে ২১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। মামলাগুলোর মধ্যে অর্থঋণ আদালতে মামলা রয়েছে ৩ হাজার ২৪০টি। রিট মামলা ২০৭টি। আপিল ও রিভিশন ২৭০টি এবং কিছু রয়েছে অন্যান্য মামলা। জনতা ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
উল্লেখ্য, এক বছরের ব্যবধানে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। ২০১৭ সালে যেখানে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল সাত হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সেখানে গত ২০১৮ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৩০৫ কোটি টাকায়। এর মধ্যে দু’টি প্রতিষ্ঠানের কাছেই পাওনা ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, মামলা কারণে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি মনে হচ্ছে। গ্রাহক কর্তৃক দায়েরকৃত রিটসমূহ ভ্যাকেট করার জন্য নিয়মিত ফলোআপ অব্যাহত আছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে রিট ভ্যাকেট করা হলেও গ্রাহক কর্তৃক পুনঃপুন রিট করে সময়ক্ষেপণ করা হয়। তবে আগামী জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণ কমে ভালো অবস্থানে চলে আসবে ব্যাংকটি।
জনতা ব্যাংক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রিট পিটিশিন দায়ের করা শীর্ষ ১৮ বৃহৎ ঋণগ্রহীতার কাছে আটকে আছে চার হাজার ৭০ কোটি টাকা। এসব তালিকার মধ্যে ‘রানকা সোহেল’র এর কাছে প্রাপ্য ৬৫২ কোটি টাকা। ঋণগ্রহীতা অন্যান্য গ্রাহকের নাম ও সম্পৃক্ত অর্থের পরিমাণ বি আর স্পিনিং-৫৮৫ কোটি টাকা, মেসার্স এস এম স্টিল-৫১২ কোটি, মডার্ন স্টিল ৪০৯ কোটি টাকা, রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং-৩১২ কোটি টাকা, লিথুন ফ্যাব্রিকস- ২৯৯ কোটি টাকা, ড্রাগন সোয়েটার ২৭৩ কোটি টাকা, ইব্রাহিম গ্রুপ ১৯৬ কোটি টাকা, সিক্স সিজন ১৮৯ কোটি টাকা, নাসা গ্রুপ ১৬৩ কোটি টাকা, এস এ অয়েল অ্যান্ড সামান্নাজ ১১৮ কোটি টাকা, অ্যালাইন অ্যাপারেলস ১১০ কোটি টাকা, লিনা পেপার মিলন ৬৭ কোটি টাকা, টোটাল ফ্যাশন ৬৩ কোটি টাকা, চয়েস গার্মেন্টস ৫৮ কোটি টাকা, মুন্নু ফ্যাব্রিকস ৩৫ কোটি টাকা, ফাইভ ব্রাদার্স ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট ১৯ কোটি টাকা এবং প্যাসিফিক ডেনিম ১০ কোটি টাকা।
আপনার মতামত লিখুন :