শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু, মানতে হবে কিছু নির্দেশনা ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা

প্রকাশিত : ১৩ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:০৯ রাত
আপডেট : ১৩ এপ্রিল, ২০১৯, ০৩:০৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কামনার আগুনে ঝলসানোর কোনো ধর্ষিতা হতে চাই না!

শাহিন আখতার : পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে হেরে গিয়ে নুসরাত জানিয়ে দিয়ে গেলো, নারী হিসেবে টিকে থাকতে গেলে আরো কতোখানি লড়াই করতে হবে। নুসরাতের মৃত্যুর পর এখন অপেক্ষা করছে আরেক হবু নুসরাত। কিছুদন পর এ-ধরনের কোনো ঘটনার মাধ্যমে হবু নুসরাতের পরিচয় আমরা জানতে পারবো! এখন নুসরাতের কথা বলি। নুসরাতকে পরিচিত করতে আর কোনো পরিচয়ের আর প্রয়োজন নেই। যে মেয়েটা পোশাকের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখতো, যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে। আজ তাকে একবাক্যেই সারাদেশ চেনে। শিক্ষকের লেবাসধারী এক নিকৃষ্ট জীবের কুদৃষ্টির গ্রাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি সে।

কামনা-বাসনার সুইচ দেয়া পুতুল না হতে চাওয়ায় তাকে ঝলসে দেয়া হয়েছিলো কেরোসিন আর আগুনে। কিন্তু ভাবতেই অবাক লাগে, ঘষেটি বেগমের মতো মেয়েরা এখনও বেঁচে আছে, যারা এই কাজে ধর্ষককে সাহায্য করেছিলো! এরাও কোনোঅংশে কম অপরাধী নয়। নুসরাতের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনার সুষ্ঠু কোন বিচার হয়নি। তারই ধারাবাহিকতার শিকার নুসরাত। এইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা আরো ঘটবে। মানুষ নাকি প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ জীব। প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়েই মানুষ তার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে।

হাজার হাজার বছর আগে বিমূর্ত প্রকৃতির মন বুঝলো মানুষ আর এই একবিংশ্ব শতাব্দীতে এসে মানুষ নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল আবিষ্কার করতে পারলোর না? ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! মানুষ হিসেবে মানুষকে বুঝতে না পারার ব্যর্থতা ফল এইসব নৃশংসতা, যা আধুনিক সভ্যতার সব অর্জনকে মূল্যহীন করে তুলছে। কিন্তু পশ্ন হচ্ছে, এর শেষ কোথায়? অবশ্যইে শেষ আছে। একে শেষ করতে হলে রাষ্ট্রকে দু’ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। যারএ কটি তাৎক্ষণিক, যেমন এসব ঘটনারঘটলে রাষ্ট্রকে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে কেউ আর এই নৃশংস ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়। যথাযথ বিচারের মাধ্যমে সবার মনে এই ধারণা ঢুকিয়ে দিতে হবে যে, অপরাধ করলে কেউ পার পাবে না। দ্বিতীয়টি হচ্ছে নারীর প্রতি দীর্ঘমেয়াদে সকলের সহমর্মিতার মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে হবে।

নারীর প্রতি যথাযথ আচরণ, সেক্স ও জেন্ডার, নারীর প্রতি বিকৃত আচরণের জন্য রাষ্ট্রের প্রদত্ত আইন প্রভৃতি পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করে এ-বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা দিতে হবে। পরিশেষে একটি কথা, একজন নারীকে কামনার বস্তু ভাবার আগে একটু ভাববেন, সে আপনারই মতো কোন পুরুষের গর্ভধারিণী মা, আদরের বোন, কলিজার টুকরো মেয়ে।

আর রাষ্ট্রের কাছে বিনীত অনুরোধ, আমরা আর কোনো রিতু মিতু নুসরাত হতে চাই না। আমরা হাতে হাত রেখে বন্ধু হতে চাই। চোখে চোখ রেখে প্রেমিকা হতে চাই। কামনার আগুনে ঝলসানোর কোনো ধর্ষিতা হতে চাই না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়