বরিশালে হত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে, পুলিশ বলছে পলাতক
খোকন আহম্মেদ হীরা : জেলার মুলাদী উপজেলার চরকালেখান গ্রামে আবুল কাশেম খান (৭৫) নামের এক ব্যক্তিকে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ বলছে আসামিরা পলাতক। আসামি গ্রেফতারে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া এক আসামি ১৩দিনের মধ্যে আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদিকে (নিহতের পুত্র) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এতে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বাদি ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
শুক্রবার দুপুরে মামলার বাদি মাহাতাব হোসেন খান অভিযোগ করেন, তারা দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় বসবাস করে আসছেন। এ সুযোগের তার বাবার সহয় সম্পত্তি জবর দখল করে রেখেছে চাচা ফরহাদ খান। ঘটনারদিন (২১ মার্চ) সকালে তার বাবা আবুল কাশেম ও বড় ভাই কাওসার ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নেন। ওইদিন ফরহাদ খানের পুত্র ফয়সাল লোকজন নিয়ে বাড়ির পেছন থেকে তাদের (মাহাতাব) সম্পত্তির গাছ কাটা শুরু করেন। এতে কাশেম খান বাঁধা প্রদান করায় প্রতিপক্ষ ফরহাদ খান, ফয়সাল হোসেন, মজিবর রহমান, আফজাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, মিলন খানসহ তাদের সহযোগিরা পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে তার বাবা আবুল কাশেম খানকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাৎক্ষনিক থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফরহাদ খানকে আটক করে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, এ ঘটনায় নিহতের পুত্র মাহাতাব হোসেন খান বাদি হয়ে ২২ মার্চ সকালে আটককৃত ফরহাদ খানসহ উল্লেখিত পাঁচজনকে আসামি করে মুলাদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভূক্ত আসামি ফরহাদ খানকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করলেও মাত্র ১৩দিনের মধ্যে সে (ফরহাদ) জামিনে মুক্ত হন। এরপর থেকে ফরহাদ খানসহ অন্যান্য আসামিরা হত্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাকে (মাহাতাব হোসেন) বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো সত্বেও মামলার তদন্তকারী অফিসার আসামিদের গ্রেফতারে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী অফিসার থানার এসআই সাইদ হোসেন জানান, আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছেনা। তবে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
নিহতের বড়পুত্র কাওসার হোসেন জানান, তার দাদা মৃত ডাঃ নুরুল ইসলাম খান মৃত্যুর আগে তার বাবা আবুল কাশেম খানকে ১০ শতক জমি দলিল করে দিয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন থেকে ঢাকায় বসবাস করার সুবাধে তার চাচা ফরহাদ খান ওই জমি জোরপূর্বক ভোগদখল করছেন। তিনি আরও জানান, চরকালেখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন উদ্দিন খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগি ফয়সাল হোসেন। তাই চেয়ারম্যানের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সে (ফয়সাল) এলাকায় নানা অপকর্ম করে আসছে। এ কারণেই ফয়সাল গংরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘোরাফিরা করলেও চেয়ারম্যানের দাপটে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেন না।
আপনার মতামত লিখুন :