মঈন মোশাররফ : ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার নোয়াখালী ও সোনাগাজীর বেশ কয়েকজন লোকের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয়েছে, সাবেক জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা একটি ক্ষমতার বলয় গড়ে তুলেছিলেন। সেই বলয়ে ছিলেন পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের শক্তিতেই অধ্যক্ষ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন, আর অভিযোগ হলে পারও পেয়ে যেতেন। এমনকি অভিযোগকারীরা উলটো হেনস্তার শিকার হতেন।
সোনাগাজী আলিয়া মাদ্রাসা উপজেলার সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা। মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা ১৫ বছর ধরে এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। তিনি জামায়াতের সাবেক উপজেলা আমীর। নাশকতা, অর্থ আত্মসাৎ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে তিন বছর আগে জামায়াত থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তারপর তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের সহায়তায় অবস্থান টিকিয়ে রাখেন। এক্ষেত্রে দুইজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম উচ্চারিত হচ্ছে। তারা হলেন সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদ আলম আর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মামুন।
এ প্রসঙ্গে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমীন বলেন, মাকসুদ নানা স্বার্থের কারণে অধ্যক্ষের পক্ষ নেয়। মাকসুদ মাদ্রাসার গভর্নিং বডিরও সদস্য।
তবে একই অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমীনের বিরুদ্ধেও। তিনি মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব বলেন, গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান হন সরকারি কর্মকর্তা। একারণে ভাইস চেয়ারম্যানই মূলত সব ক্ষমতার অধিকারী। ২৭ মার্চ যৌন হয়রানির ঘটনায় রুহুল আমীনই কৌশলে অধ্যক্ষকে বাচাতে চেয়েছিলেন।
সোনাগাজী খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদ অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষকে বাঁচাতে পুলিশের সঙ্গে লেনদেন এবং দেন দরবার আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমীনই করেন। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে আরও এক ছাত্রী অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করলে তাও আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রশাসনের সহায়তায় ধামাচাপা দেয়া হয়। তখন অধ্যক্ষ সবার কাছে মাফ চান এবং বলেন ভবিষ্যতে এরকম কাজ আর করবেন না।
মনির আহমেদ বলেন, ওসি এবং তার সহযোগীরা যৌন হয়রানির ঘটনাকে নাটক বলে প্রচার করেছেন। আর পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার পর তারা এটাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :