নূর মাজিদ : বিশ্বব্যাপী বিগত কয়েকবছর ধরেই বাড়ছে পণ্য নকলের পরিমাণ। যা বর্তমানে মোট বিশ্ব বাণিজ্যের ৩ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ৩৬টি উন্নত দেশের জোট ওইসিডি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অফিসের এক সম্মিলিত প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়।
২০১৬ সালে বিশ্বে ৫০ হাজার ৯শ কোটি ডলারের নকল পণ্য আটক করা হয়। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৪৬ হাজার ১শ কোটি ডলার বা মোট বৈশ্বিক বাণিজ্যের ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এই জোটের আওতার বাহিরে থাকা দেশগুলো থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে তার মাঝে ৬ দশমিক ৮ শতাংশই ছিলো নকল। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ ছিলো ৫ শতাংশ।
অবশ্য এই তালিকায় নেই ইউরোপেই প্রস্তুতকৃত নকল পণ্যের বাণিজ্যিক পরিমাণ। এর বাহিরে রয়ে গেছে অনলাইন শপিং বা চুরি করে বিক্রি করা পণ্যের বাজারও।
ওইসিডি প্রতিবেদনে বলা হয়, নকল পণ্যের লেনদেন মূলপণ্যের মালিকানাস্বত্ব, ভোক্তাধিকার ক্ষুণè করাসহ অপরাধী চক্রগুলোর অর্থায়নের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে। এতে নানা দেশের সরকারি এবং বেসরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ আর্থিক লোকসান হয়। আবার বাজারে তাদের সুনামও নষ্ট হয়। অনেক ক্ষেত্রে কো¤পানিগুলোর প্রাক্তন বা বর্তমান কর্মচারীরাও পণ্য নকলে জড়িত হয়ে পড়েন।
চিকিৎসা সরঞ্জাম, গাড়ির যন্ত্রাংশ, খেলনা এবং প্রসাধনী সামগ্রী নকল করা হলে, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। ওইসিডির পাবলিক গভর্ননেন্স ডিরেক্টর মার্কোস বান্টুরি এসব তথ্য জানান।
এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করে ওইসিডি জোটের ইইউ প্রতিনিধি পল মায়ের বলেন, যেখানে সরকার এবং আইনের শাসন দুর্বল, সেখানেই নকল পণ্যের প্রসার এবং উৎপাদন বেশি। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে, পণ্যের মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ এবং দুর্নীতি দূর করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বর্তমানে বিশ্বে সবচাইতে বেশী নকল হচ্ছে জুতা, পোশাক এবং চামড়াজাত পণ্যের বাজারে। নামীদামী ব্রান্ডের তৈরি এই ধরণের পণ্যের বাজারমূল্য বেশি থাকায় এগুলোর নকলও হয় বেশি।
তবে ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি নকল পণ্যের চালান আটক হয়েছে হংকং এবং মূল চীনা ভূখ-ে । এর বাহিরে যে দেশগুলো পণ্য নকলে এগিয়ে রয়েছে তারা হলো থাইল্যান্ড, ভারত, আরব আমিরাত এবং তুরস্ক।
ওইসিডি অর্গ
আপনার মতামত লিখুন :