শিরোনাম

প্রকাশিত : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ০১:৫৫ রাত
আপডেট : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ০১:৫৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পোশাকশিল্পে নারী নেতৃত্ব চান রুবানা হক, কাজ করবেন শ্রমিকদের ভবিষ্যত সুরক্ষা নিয়ে

লিহান লিমা: প্রথম নারী হিসেবে বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের বৃহত্তম সংস্থা বিজিএমইএ’র সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রুবানা হক। মঙ্গলবার সংস্থাটি জানায়, নারী নেতৃত্ব তৈরি, কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রসার, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য কাজ করবেন তিনি। থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন

রুবানা হক বিশ্বখ্যাত এইচ এন্ড এম ও প্রিমার্কের মতো ব্র্যান্ডগুলোর সাপ্লাই চেইন মোহাম্মদি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফেকচার এন্ড এক্সপোর্টার এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) নতুন এই সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই খাতে কর্মরত ৮০ভাগ নারীকে তাদের নিজের অধিকারের কথা বলার সুযোগ দেয়া আবশ্যক। বর্তমানে, কর্মক্ষেত্রে বেশিরভাগ নারী হলেও ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে থাকা ব্যক্তিরা পুরুষ। এটি পরিবর্তন করতে হবে।’

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ৪ হাজার ৫০০টি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেশিরভাগই নারী। যাদের প্রতিনিয়ত কর্মপরিবেশের নিরপত্তা, বেতন ও অন্যান্য বিষয়ে পুরুষ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হয়। রুবানা চান এই দৃশ্যের আমূল পরিবর্তন।

রয়টার্স আরো জানায়, রুবানা এমন এক সময় নির্বাচিত হলেন যখন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ইউরোপিয় ফ্যাশন লেবেলগুলোর নির্ধারিত ‘ফ্যাক্টরি ইনসপেকশন ম্যাকানিজম’ বন্ধের সিদ্ধান্ত দেয়। রুবানা বলেন, উৎপাদকরা নিজেদের মনিটরিং মেকানিজম জোরদার করতে চেয়েছেন। তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল কারখানাগুলোকে নিরাপদ করে তুলতে ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে ২০০টি পোশাক ব্র্যান্ড ও ট্রেড ইউনিয়ন স্বাধীন, আইনগত ও বাধ্যতামূলক চুক্তি ‘বাংলাদেশ একর্ড’ স্বাক্ষর করে।

টেক্সটাইল খাতে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত থাকা রুবানা জানান, দুই দশক ধরে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত থাকার পর বর্তমান দায়িত্ব উৎপাদন ও রপ্তানিখাতে তার কর্মপরিধিকে বৃহত্তরভাবে সম্প্রসারণ করবে। তিনি বলেন, ‘একজন নারী হিসেবে পরিবর্তনে কিছুটা প্রতিকূলতা থাকে। কিন্তু একজন নারী হিসেবেই আজ আমি এই জায়গায় এসেছি। এবং আমি বিশ্বাস করি প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা নারী শ্রমিকদের প্রতি আমার আচরণ ভিন্ন ও সহানুভূতিশীল হবে।’ তিনি জানান, নারী শ্রমিকদের ভবিষ্যত সুরক্ষার জন্য তাদের শিক্ষিত ও ফ্যাক্টরিগুলোর মধ্যমানের-ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। পুরস্কারপ্রাপ্ত এই কবি ও কলামিস্ট বলেন, ‘আমি লিঙ্গভিত্তিক নেতৃত্বমূলক প্রকল্প তৈরি করতে চাই যা নারী ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে।’ এই সময় তিনি শিল্পখাতে শ্রমিকদের হয়রানির অভিযোগকে নেতিবাচক চর্চা ও একঘরে বলে এটিকে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘এই খাতে ৮০ভাগ নারী স্বাধীনভাবে কাজ করছেন এবং আমাদের অর্থনীতিতে বৃহত্তর অবদান রাখছেন।’

এদিকে শ্রমিক অধিকার ক্যাম্পেইনারা বলছেন, একজন নারী হিসেবে রুবানা গ্লাস সিলিং করেছেন। তবে মোহাম্মদি গ্রুপের প্রধান হিসেবে শ্রমিকদের চাইতে ব্যবসায়ের দিকেই তার অবস্থান বেশি থাকবে। আওয়াজ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নাজমা আক্তার বলেন, ‘তার নির্বাচিত হওয়াটা একটি ভালো ব্যাপার। কিন্তু আমি নিশ্চিত নই পুরুষরা আধিপত্য বিস্তার করে রয়েছেন এমন একটি সংস্থায় তিনি কতটা প্রভাব রাখতে পারবেন। তবে আমি প্রত্যাশা করি, তিনি জীবনধারণের জন্য পর্যাপ্ত মজুরি, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, মাতৃত্বকালীন সুবিধা ও ফ্যাক্টরিতে সহিংসতার মতো ইস্যুগুলোতে নজর দেবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়