সাত্তার আজাদ, সিলেট : পহেলা বৈশাখকে ঘিরে সিলেটে মৃৎশিল্পে সাথে জড়িত নারী-পুরুষদের কর্মব্যস্ততা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। কুমার পরিবারের সদস্যরা দিন-রাত মাটির পাত্রে রঙের প্রলেপ দিয়ে তা আকর্ষণীয় করে তুলছেন। বৈশাখী মেলা ঘনিয়ে আসায় এ কাজে বড়দের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিশোররাও।
সিলেটে মৃৎশিল্পের পরিধি কমে আসলেও বৈশাখকে ঘিরে ব্যস্ত কর্মযজ্ঞ চলছে শিল্পিদের মধ্যে। চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সিলেটে মৃৎশিল্পিদের দেখা মিলে। চৈত্রমাসে রোববান্নী উৎসব উপলক্ষে বিয়ানীবাজারে বাসুদেবের মেলায় ও গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণে শ্রীচৈতন্যের বাড়ি প্রাঙ্গণে মেলা উপলক্ষে দেখা মিলে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মাটির তৈরি পুতুল, বাচ্চাদের খেলনা, মাটির হাড়ি-পাতিল, কলসিসহ নানা ধরনের ফল, জীব-জন্তু, সবজিসহ বিভিন্ন তৈজসপত্র। এ ছাড়া সিলেট নগরীর তোপখানা রোডে মাটির হরেক খেলনা ও তৈজসপত্র বিক্রি হয় প্রতিদিন। সেখানেও মৃৎশিল্পিদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে গেছে। মেলায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে মৃৎশিল্পের নানা পণ্য। মাটির খেলনা ও তৈজসপত্রে রঙের প্রলেপ লাগিয়ে আকর্ষণীয় করা হচ্ছে। বৈশাখে শখের বসে অনেকেই এসব মাটির পণ্য কিনেন।
সিলেটে মাটির তৈরি পণ্যের কদর বেড়েছে। এখন প্রতিটি পরিবারে মাটির পুতুল, বাঘ-ভাল্লুক, হরিণসহ বিভিন্ন পশুপাখি সাজিয়ে রাখা হয়। বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা উপলক্ষে বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রীসহ নিত্যব্যবহারের হাঁড়ি-পাতিল, কলসি, থালা-বাসনসহ নানা ধরনের মাটির পাত্র বিক্রি হয়।
সরেজমিন নগরীর তোপখানা রোডে গিয়ে দেখা যায়, পরম যত্ন সহকারে মাটির তৈরি নানা পণ্যসামগ্রী রং করা হচ্ছে। বৈশাখ আসছে। তাই সে আমেজ পড়ছে মাটির শিল্পে। বৈশাখের রঙ লেগেছে মাটির তৈরি তৈজস-পাতিতেও। একের পর এক আলপনার ছোঁয়া লাগিয়ে দিচ্ছেন তাদের বানানো রকমারি সব মাটির ব্যাংক, পুতুল আর থালা বাসনের গায়ে। মাটির বানানো এসব জিনিসে খুঁজে পাওয়া যায় ঐতিহ্যের ঘ্রাণ আর শেকড়ের গন্ধ। সেই সাথে বহন করে আমাদের পরিচয়ও।
মৃৎশিল্পের সাথে জড়িতরা জানান, ঘর সাজাতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাটির তৈরি এসব সামগ্রী। ঘর বাড়ি কিংবা খাবার টেবিলটাকে একটু অন্যরকম করে সাজাতে জুড়ি নেই এই মৃৎশিল্পের। তাই বৈশাখের মেলায় মাটির তৈরি পণ্যসামগ্রীর কদর যেমন বাড়ে, বাড়ে বিক্রিও।
আপনার মতামত লিখুন :