শিরোনাম
◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ সাভারে শো-রুমের স্টোররুমে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ২ ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ চলচ্চিত্র ও টিভি খাতে ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের

প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:২৬ দুপুর
আপডেট : ০১ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:২৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চীনের কাছে বাংলাদেশের ৫০০ কোটি ডলারের ঋণপ্রস্তাব

ডেস্ক রিপোর্ট : বন্ধু প্রতীম চীনের কাছে পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের আট প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সরকারের কাছে ইতিমধ্যে প্রকল্প তালিকা পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সম্ভাব্য চীন সফরে এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাবে বলে আশা করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ইনকিলাব।

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় ২৭ প্রকল্পের জন্য সাড়ে ২২ বিলিয়ন ডলারের সমঝোতা চুক্তি হয়। সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এসব প্রকল্পের ঋণ অনুমোদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পসহ পাঁচ প্রকল্পে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের জন্য চীনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে অর্থছাড় হয়েছে ৫০ কোটি ডলার।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎ খাতের দুটি প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে ঋণ চুক্তি হওয়ার কথা হয়েছে। এ দুটি প্রকল্পে ২৯০ কোটি ডলার ঋণের প্রস্তাব রয়েছে। ডিপিডিসি এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম আওতায় ওভারলোডেড ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার পরিবর্তনে এ দুটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ঋণের শর্ত নিয়ে জটিলতা রয়েছে। এ কারণে ঋণচুক্তিও বিলম্বিত হচ্ছে।

ইআরডি কর্মকর্তারা জানান, নতুন করে দ্রুত ঋণ অনুমোদনের জন্য আটটি অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্পে চীনের কাছে ১১৫ কোটি ৫১ লাখ ডলার ঋণ চাওয়া হয়েছে। এর আগে গত বছরের অক্টোবর চীনের কাছে এ প্রকল্পের প্রাথমিক ঋণ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামের আনোয়ারার ৭৮৩ একর জমিতে চায়না অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ২২ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি অংশীদারি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৭ সালের জুন মাসে। জি টু জি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন হবে। চীন সরকার এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য গত বছরের নভেম্বরে চীন সরকারের কাছে ঋণ আবেদন করা হয়েছে।

তালিকায় রয়েছে রেলের দুই প্রকল্প। এর মধ্যে আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত মিটার গেজ রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর প্রকল্পে ঋণ চাওয়া হয়েছে ১২৭ কোটি ডলার। ১০৪ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব করা হয়েছে জয়দেবপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ডবল লাইন ও ডবল গেজ রেললাইন নির্মাণে। এ ছাড়া বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) পাটকলগুলো আধুনিকায়নে (২৪ কোটি ডলার), ডিজিটাল সংযোগ প্রকল্পে ৮৪ কোটি ডলার, রাজশাহী পানি শোধনাগার নির্মাণে ৩৫ কোটি ডলার এবং বিটিভির ছয়টি নতুন স্টেশন নির্মাণে প্রস্তাব করা হয়েছে ১২ কোটি ৫১ লাখ ডলার।

জানা গেছে, বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিনিয়োগ আছে ৩৮ শ’ কোটি ডলারেরও বেশি। এই অর্থের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক অবকাঠামো প্রকল্পে ২৪৬৫ কোটি এবং যৌথ উদ্যোগী খাতে ১৩৬০ কোটি ডলার। এ ছাড়া ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং সফরের সময় ২০০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ও শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান হারে চীনা বিনিয়োগ হচ্ছে। অবকাঠামো ও উৎপাদন খাতে চীনা বিনিয়োগ আবার আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক এবং বিদেশ নীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও কর্ণফুলী টানেলসহ ছোট-বড় প্রজেক্ট এলাকা ছাড়াও ঢাকার উত্তরা, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, ডিওএইচএস এলাকাসমূহ ও অন্যান্য শিল্পাঞ্চলসহ পুরান ঢাকার বাজার এবং অন্যান্য স্থানের সরকারি ও বেসরকারি অফিসে চীনাদের উপস্থিতি/যাতায়াত চোখে পড়ে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতার পাশাপাশি আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়ার জন্য চীনে যাচ্ছে। অর্থাৎ ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক কারণে উভয় দেশের মানুষের জন্য যোগাযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দিনে এই ধারা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানেও প্রচুর চীনা বিনিয়োগ হচ্ছে। উল্লিখিত ৬টি দেশ (বাংলাদেশসহ) ছাড়াও ভিয়েতনাম, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, (২০১৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশকে ২০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করে) ও মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশসমূহে চাইনিজ বিনিয়োগ/ঋণ আছে। পাশাপাশি উগান্ডা, মোজাম্বিক, কেনিয়া, সুদান, জাম্বিয়া, কঙ্গো, মিসর, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া, জিবুতি, জামাইকা, ক্যামেরুন, মালি ইত্যাদিসহ অধিকাংশ আফ্রিকান দেশেও করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়