শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল, ২০১৯, ০৬:০১ সকাল
আপডেট : ০১ এপ্রিল, ২০১৯, ০৬:০১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শুধু বহুতল নয়, সব ভবনেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জরুরি

বাংলা ট্রিবিউন : শুধু বহুতল ভবন নয়, এক তলা থেকে শুরু করে সব উচ্চতার ভবনেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা জরুরি বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, নগরবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের অনুমোদন নিয়ে প্রতিটি ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি যেমন অনেক কমে যাবে, তেমনি প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকবে না।

ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষের ভাষায়, ছয়তলার ওপরের ভবনগুলো হচ্ছে বহুতল ভবন। আর রাজউকের বিবেচনায় বহুতল হলো ১০ তলার ওপরের ভবনগুলো। ভবন নীতিমালা অনুযায়ী বহুতল ভবনের ক্ষেত্রেই কেবল ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নিতে হয়। অন্য ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন হয় না।

বহুতল ভবন নীতিমালার ক্ষেত্রে এমন বিভ্রান্তি কেন জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বহুতল ভবন হলেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের অনুমোদন নিতে হয়। এ ক্ষেত্রে আমরা ছয়তলা ভবনগুলোকে বলি বহুতল ভবন। আর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ১০ তলা ভবনের ওপরের ভবনগুলোকে বলে বহুতল ভবন। এটা শুধু বহুতল ভবনের সংজ্ঞার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে। এখানে ফায়ার ব্যবস্থা নিয়ে কিছু বলা হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘রাজউকের সঙ্গে আমাদের যে পার্থক্যটা আছে, সেটা আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষগুলোকে জানিয়েছি।’

ছয়তলার নিচের ভবনগুলোর ক্ষেত্রে কেন লাগে না, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘ছোট ভবনগুলোর ক্ষেত্রে যেমন একতলা বা দোতলা ভবনগুলোতে ফায়ার এক্সিট ভালো থাকে। সে জন্য হয়তো কোনও ব্যাখ্যা থাকতে পারে। কিন্তু ভবন নির্মাণ করলেই নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই নিজস্ব ফায়ার ব্যবস্থা রাখা জরুরি। আর বহুতল ভবনগুলোর ক্ষেত্রেতো অবশ্যই অগ্নিনির্বাপণের সব ধরনের ব্যবস্থা থাকতে হবে, যাতে অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার মতো তারা কাজ করতে পারে। সাধারণত ফায়ার সার্ভিসের রেসপন্সটা হলো ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে চলে আসবে। তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবে।’

ফায়ার সার্ভিসের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোড রয়েছে। কতটুকু জায়গায় কয় তলা ভবন হবে? ফায়ার সিকিউরিটি কী হবে? সবই বলা আছে ভবন নির্মাণ নীতিমালায়। ভবন নির্মাণের নীতিমালায় সব বলে দিয়েছে সরকার। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। এই নীতিমালাটা আমাদের মানতে হবে। মানার মানসিকতা থাকতে হবে। আইন মানার অভ্যাসটা নিজ থেকেই করতে হবে। তাহলেই আমরা নিরাপদ থাকতে পারবো।’
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহমেদ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বহুতল ভবনের এ নীতিমালা বা আইনটা একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী করেছে অনেক আগে, যেটা পরিবর্তন জরুরি। একতলা, দোতলা নয়, সব ভবনেই ফায়ার ব্যবস্থা রাখা জরুরি। বহুতল ভবনের সংজ্ঞার বিষয়টি সংশোধনের জন্য ফায়ার সার্ভিস থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।’

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রতিটি পদে পদে বিবেচনা করতে হবে। সে কারণে ভবন একতলা হোক আর ১০ তলা হোক, সব ক্ষেত্রেই ভবন মালিক ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকির প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য ভবন নীতিমালা ও আইনকে ঢেলে সাজাতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারের ভবন নীতিমালায় বলা আছে, ভবনের একটি অংশে আগুন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের মধ্যে বহুতল ভবন নীতিমালা নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ বলছে ছয়তলার ওপরে বহুতল, কেউ বলছে ১০ তলার ওপরে বহুতল। যা-ই হোক, মানুষের নিরাপত্তার জন্য আগুন নির্বাপণের জন্য প্রত্যেকটি ভবনেই প্রস্তুতি রাখতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রতিটা ভবনেই আগুন নির্বাপণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকবে। অটোমেটিক ফায়ার অ্যালার্ম থাকতে হবে। একতলার অধিক যে ভবনগুলো থাকবে সেগুলোর দরজা এমন হতে হবে, যাতে একতলার ধোঁয়া আরেকতলায় যেতে না পারে। এটা বাধ্যতামূলক করতে হবে।’

অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, ‘বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে ফায়ার এক্সিট সুপরিসর হতে হবে। আমরা কখনও এগুলো মেনে চলি না। কারণ, এসবের বিরুদ্ধে কোনোরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কখনও। ১৮ তলা ভবন ২৩ তলা হয়েছে (বনানীর এফ আর টাওয়ার)। সেটা কীভাবে হলো? অনিয়ম হয়েছে।’ রাজউকের কোনও জবাবদিহিতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়