শিরোনাম
◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে আজ! ◈ বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ চেক প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ প্রফেসর ইউনূসকে প্রদত্ত "ট্রি অব পিস" প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য: ইউনূস সেন্টার ◈ নির্বাচনী বন্ড কেবল ভারত নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি: অর্থমন্ত্রীর স্বামী ◈ কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান পরিদর্শন করে দেশে ফিরলেন ভুটানের রাজা ◈ জনগণকে সংগঠিত করে চূড়ান্তভাবে বিজয় অর্জন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১০:৫৮ দুপুর
আপডেট : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১০:৫৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এফআর টাওয়ারের আগুন পরিকল্পিত বলেই মনে করা হচ্ছে

ডেস্ক রিপোর্ট : বনানীর এফ.আর টাওয়ারের পাঁচটি তলা নকশাবহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই তলাগুলো ভেঙে ফেলার জন্য রাজউক নোটিশ প্রদান করেছে। কিন্তু ডেভেলপার কোম্পানি অবৈধ অংশ ভাঙেনি বরং অবৈধভাবে নির্মিত ভবনের ২১, ২২ ও ২৩ তলা একটি কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে দখলে রেখেছিল। ভূমি মালিক কর্তৃক নোটিশ প্রাপ্তির পরও এসব ফ্লোর খালি করে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ভূমি মালিক নাশকতার আশঙ্কা করে ভবনে একটি নোটিশও টাঙ্গিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে ওই নোটিশ টানানো এবং সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অনেকেই ধারণা করছেন এ অগ্নিকাণ্ড কি পরিকল্পিত। ইত্তেফাক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে অবস্থিত বহুতল ভবন এফ.আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভবনটির নবম তলায় এ আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জন প্রাণ হারান। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আগুনে এত লোকের প্রাণহানিতে সরকারি সংস্থার পাশাপাশি ভবন মালিকের দায় কতটুকু সেটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন, একেকটি আগুনের ঘটনার পর সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তখন সকলের টনক নড়ে। চারদিকে হৈচৈ পড়ে। গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

এদিকে গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এফ.আর টাওয়ার ভবনটিকে ১৮তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৯৯৬ সালে। ২০০৫ সালে এসে রাজউকে একটা কপি দাখিল করে বলা হয় এটা ২৩ তলা হয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, যে কপি ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে তার সমর্থনে রাজউকের রেকর্ডে কোথাও কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। এতে তদন্তে রিপোর্টে ধরে নেওয়া হয় ২৩ তলার যে নকশা ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে তা সঠিক নয় এবং মূল অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। সে সময়ে রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা ছিলেন, তাদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। মন্ত্রী বলেন, গাফিলতির কারণে দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকবে, যাদের কারণে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড, তাদের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

নাশকতার আশঙ্কা করে জরুরি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি

এফ.আর টাওয়ার নির্মাণে যে অনিয়ম হয়েছে সেসব বিষয় তুলে ধরে ওই ভবনে সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিক একটি নোটিশ টাঙ্গিয়ে ছিলেন বেশ কিছুদিন আগে। কর্তৃপক্ষ/স্বত্বাধিকারী/ল্যান্ড ওনার-এর পক্ষ হতে দেওয়া ওই নোটিশে বলা হয়েছে: রাজউক থেকে সম্প্রতি পাঠানো চিঠি অনুযায়ী রাজউকের নির্মাণ সংক্রান্ত বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে এফ.আর টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এর ওপর অবৈধভাবে অধিক উচ্চতায় ভবন নির্মাণ করার ফলে রাজউক সম্প্রতি একটি নির্দেশনা দেয়। অবিলম্বে অবৈধ উচ্চতা সংশ্লিষ্ট অংশটি অপসারণ করে ভবনটিকে বৈধ উচ্চতায় ফিরিয়ে আনার জন্য রাজউকের নোটিশে উল্লেখ করা হয়। রাজউকের নির্দেশনা মোতাবেক উল্লেখিত অবৈধ নির্মিত উচ্চতা অপসারণের কার্যক্রমের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু অতীব দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আইনগত দখলদার এবং প্রকৃত ল্যান্ড ওনারের অনুমতি ছাড়া ছাদে অবৈধ স্থাপনা (কথিত ব্যারাক) নির্মাণ করা হয়েছে।

নোটিশে আরও বলা হয়, রাজউকের চিঠির ব্যত্যয় ঘটিয়ে তাসভীর উল ইসলাম (কাশেম ড্রাইসেলসের মালিক) এফ আর টাওয়ারের ২১, ২২ ও ২৩তম তলা অবৈধভাবে দখল করে আছেন। এজন্য তিনি একজন অবৈধ দখলদারও বটে। রাজউকের নির্দেশনা অনুসারে ভবনের উচ্চতা সংশ্লিষ্ট অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কাজ যাতে কোনও ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য ছাদের অবৈধ স্থাপনাসহ (কথিত ব্যারাক) ভবনের ২১, ২২ ও ২৩তম তলা অবৈধ দখলদার তাসভীর উল ইসলামকে তার সব আসবাবপত্র ও মালামাল আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। নোটিশে শঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়, উপরোল্লিখিত সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যেকোনও পদক্ষেপ থেকে কোনোরূপ বাধা-বিপত্তি বা কোনও প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হলে অথবা অত্র ভবনের অন্য কোনও অংশের ক্ষতিসাধন বা কোনোরূপ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধ্বংস করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।

‘তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে’

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় যারা দায়ী তারা যত প্রভাবশালীই হোন, বিত্তে, ক্ষমতায়, পদ-পদবিতে তিনি যেই হোন না কেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং আমরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি অতীতের মতো করে নয়, কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি এই ভবনের প্লান অনুমোদনের প্রক্রিয়ার ভেতরে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে কি না, অনুমোদিত প্লানের বাইরে বিল্ডিং নির্মাণ হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত, ডেভেলপার, ভবন মালিক এমনকি আমাদের সংস্থার কেউ জড়িত থাকলে তার সম্পর্কে প্রতিবেদন দেবেন। এরকম মর্মান্তিক ঘটনা যারা টাকার লোভে ঘটায়, সেই নরপিশাচদের সর্বোচ্চ আইনের আওতায় এনে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, দ্রুতগতিতে আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়