শিরোনাম
◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ০১:৪০ রাত
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০১৯, ০১:৪০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মীরসরাইয়ের নান্দনিক তাজমহল মসজিদ

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে: বাহির থেকে দেখতে অনেকটা ভারতের আগ্রার তাজমহলের মত। ধবধবে সাদা রঙে আবৃত মসজিদটি এক নজর দেখার জন্য অনেকে ছুটে আসেন। অনেকে আবার খালি মসজিদ এবং মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে স্মৃতির পাতায় রেখে দিয়েছেন। কার্পেটিং করা সড়ক ঘেষে চার দেয়ালের সীমানা প্রাচীরের মধ্যখানে এমন একটি মসজিদ দেখার অনুভূতি অনেকেরই জাগতে পারে। শুধু কি তাই! মসজিদের সামনে সুবজ বেষ্টনী আর ফ্লোর করা বিশাল মাঠ। দু’পাশে দু’টি পুকুর। পুকুরে সানবাঁধানো ঘাট, পুকুর ধারে ঘাটের পাশে কাঠ বাদাম গাছের মেঘের মত ছায়া।  মসজিদকে ঘিরে দু’পাশে সুবিশাল দু’টি একাডেমিক ভবনও নির্মাণ করেছেন। এতদ অঞ্চলের মানুষের মাঝে নিরক্ষরতার গ্লানি মুছে দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এখানে একটি দাখিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

মীরসরাই উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের জোরারগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তে এই মসজিদের অবস্থান। যাকে স্থনীয়রা এক নামে “তাজমহল মসজিদ” নামে চিনেন। পুরো ১ একর জমির উপর একটি মসজিদ, দু’টি একাডেমিক ভবন, মসজিদের দু’পাশে দু’টি পুকুর। যাতে রয়েছে সানবাঁধানো ঘাট। আর মধ্যখানে রয়েছে সবুজ ঘাসের বেষ্ঠনি আর ফ্লোর করা বিশাল মাঠ।

সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় এমনি দৃশ্য। পুরো মসজিদটি সাদা রঙে আবৃত। এটি তৈরী করা হয়েছে ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে। মসজিদটি ৩ গম্বুজ বিশিষ্ঠ যার চার পাশে সাঁই দাড়িয়ে আছে চারটি পিলার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মসজিদটির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল বিগত বাংলা ১৯৯৭ সালের দিকে ইংরেজী হিসেবে দাঁড়ায় ১৯৯১ সাল। স্থানীয় ৬ নং ইছাখালি ইউনিয়নের বাসিন্দা মরহুম মৌলভী নজির আহমদের ছেলে প্রয়াত আলহাজ্ব সফিউল্লাহ তার নিজস্ব জমিতে এই মসজিদটি স্থাপন করেন। সে সময় তিনি প্রায়ই ভারতে সফরে যেতেন। তখন তিনি তাজমহলের সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধহন। পরে তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তাজমহলের আদলে দেশে একটি মসজিদ নির্মাণ করবেন। সেখানে এক প্রকৌশলীর সহায়তায় আগ্রার ওই পুরো তাজমহলের আদলে হার্ডবোর্ডে সম্পূর্ণ একটা নকশা তৈরী করেন। যা পরবর্তিতে তিনি স্বদেশে এসে প্রকৌশলীর সহায়তায় স্থানীয় বিল্ডংয়ের ঠিাকাদার তোফায়েলকে এটার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেন। সে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে অতপর সম্পূর্ণ মসজিদটি নির্মাণ করেন। সূত্রে আরো জানা যায়, মসজিদটির নাম করণ করেন, তার ছেলে মরহুম ফখরুদ্দিনন মাহমুদ জামে মসজিদ প্রকাশ তাজমহল মসজিদ নামে।

উল্লেখ্য ফখরুদ্দিন মাহমুদ ভারতে শিক্ষার্জনের জন্য যান। সেখানে অনাকাঙ্খিত একটি দূর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। পরে তার স্মৃতি স্বরুপ মসজিদটির নাম করণ করা হয়। এদিকে আলহাজ্ব সফিউল্লাহ শুধু মসজিদ নির্মাণ করে খ্যান্ত হননি। মসজিদের খোরাক মুসল্লি জোগান দিতে মসদিদের উত্তর এবং দক্ষিণ প্রান্তে দ্বিতল বিশিষ্ঠ দু’টি একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেন। সেখানে বিগত ২০০০ সাল থেকে একটি দাখিল মাদরাসার কার্যক্রম শুরু হয়। যা তার পিতা মরহুম মৌলভী নজির আহমদের নামে নাম করণ করেন “মৌলভী নজির আহমদ আদর্ম দাখিল মাদরাসা হিসেবে।” বর্তমানে উক্ত মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রমে উপজেলার শ্রেষ্ঠ একটি বিদ্যাপীঠে পরিনত হয়েছে। উপজেলা জুড়ে বেশ নাম ডাক রয়েছে মাদরাসাটির।

এদিকে মসজিদ ঘুরে দেখা যায়, মসজিদটি দোতলা বিশিষ্ট। যার নীচ তলায় পুরুষরা একসাথে জামায়াতে ২৫০ জন, আর দোতলায় অনুরুপ মহিলারাসহ মোট ৫০০ জন এভাবে নামাজ আদায় করতে পারবেন। দোতলায় উঠার জন্য মসজিদের ভেতরে দু’পাশে দু’টি সিড়িও রয়েছে। প্রতিদিন মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়রা একসাথে জোহরের নামাজ আদায় করেন। অনেকে নামাজ আদায় করার এবং মসজিদের আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দুর-দূরান্ত থেকে এখানে আসেন। স্থানীয়রা অনেকে বিকালে আছরের নামাজ আদায় করে পুকুর ঘাটে কিংবা মাঠে বসে গল্প করেন মাগরিব পর্যন্ত। আবার অনেকে মাগরিবের নামাজ পড়ে এশার পর্যন্ত এখানে বসে সময় কাটান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়