শিরোনাম
◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০২:২৩ রাত
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০২:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুলিশ কমিশনারের প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

প্রভাষ আমিন : সড়ক দুর্ঘটনায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরারের মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আবার মাঠে নেমেছিলো। দু’দিন পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের আশ্বাসে আন্দোলন ২৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিলো। এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে অসাধারণ এক গণজাগরণ ঘটেছিলো। হেলমেট বাহিনীর তান্ডব বে সে আন্দোলনের অপমৃত্যু ঘটলেও তা থেকে আমাদের শিক্ষণীয় ছিলো অনেক। কিন্তু সমস্যা হলো সে আন্দোলন থেকে আমরা কিছুই শিখিনি। চোখ খুলে দেয়ার কথা বলা হলেও আমরা আসলে কুম্ভকর্ণ, আমাদের ঘুম ভাঙায় সাধ্যি কার। গত বছরের আন্দোলন থেকেই কিছুই মেলেনি, আর এবার স্থগিত হওয়া আন্দোলন থেকেও যে কিছু মিলবে না এটা জানতে পন্ডিত হতে হয় না। তার মানে রাস্তা অনিরাপদই থাকবে। প্রতিদিনই রক্ত ঝরবে রাজপথে।

আতিকুল ইসলামকে ধন্যবাদ। তিনি তবু আশ্বাস দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে ঘরে ফিরিয়েছেন। কিন্তু মেয়র নিজেও নিশ্চয়ই জানেন ২৮ মার্চ কেন, ২৮ মাসেও তার পক্ষে শিক্ষার্থীদের দাবি মানা সম্ভব নয়। আর নিরাপদ সড়কের দাবি শুধু শিক্ষার্থীদের হবে কেন, এ দাবি সবার। কিন্তু এ দাবি মেয়র কেন বাংলাদেশে কারো পক্ষেই আপাতত মেনে নেয়া সম্ভব নয়। দেখেশুনে তাই মনে হচ্ছে।

এই মনে হওয়াটা আরো জোরালো হয়েছে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিঞার অসহায়ত্ব দেখে। আবরারের মৃত্যুর পর ট্রাফিক সচেতনতামূলক এক অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার জানান, সুপ্রভাত পরিবহনের যে গাড়িটি আবরারকে হত্যা করেছে, সেটির রুট পারমিট ছিলো ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রুটের। কিন্তু চলছিলো সদরঘাট-গাজীপুর রুটে। তিনি জানিয়েছেন, বাসটির বিরুদ্ধে সাতাশটি মামলা হয়েছিলো। এরপর তিনি প্রশ্ন করেছেন, তাহলে বাসটি এতোদিন ধরে ঢাকার রাস্তায় চলছিলো কী করে? কিন্তু আমার প্রশ্ন, কমিশনার এই প্রশ্ন কার কাছে করেছেন, কার জানা আছে এর উত্তর? যদি ডিএমপি কমিশনার নিজের কাছে করে থাকেন, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। তবে এই প্রশ্নটি আমাদের ডিএমপি কমিশনারের কাছে করার কথা। তাকেই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। যাদের অবহেলায় সাতাশটি মামলা খাওয়া বাস ভুল রুটে চলতে চলতে আবরারকে মেরে ফেললো, তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে নইলে নামকাওয়াস্তে ব্যর্থতার দায় স্বীকার, আত্মসমালোচনা আর আত্মজিজ্ঞাসায় সমাধান হবে না। আসাদুজ্জাসান মিঞা লোক ভালো। তাই তিনি ব্যর্থতার দায় স্বীকার করেছেন। অনেকে তো তাও করেন না। সবাই তো নিজের দায় অন্যের কাঁধে চাপাতে ব্যস্ত থাকেন। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে না পারার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করলেও ডিএমপি কমিশনার পদত্যাগ করেননি। বাংলাদেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। আমিও আসাদুজ্জামান মিঞার পদত্যাগ চাইছি না। কারণ সিস্টেম না বদলে শুধু ব্যক্তি বদলে লাভ হবে না। ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে আসাদুজ্জামান মিঞা পদত্যাগ করলেও নতুন কমিশনার তো মঙ্গল গ্রহ থেকে আসবে না। চাইলে আমি মেয়র আতিকুল ইসলামেরও পদত্যাগ চাইতে পারতাম। কারণ শিক্ষার্থীদের দেয়া প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করতে পারেননি। কিন্তু পারবেন যে না, সেটা তো আমরা আগেই জানি।

অথচ সমাধানটা কিন্তু খুব কঠিন নয়। যদি আজ থেকে আমরা সবাই আইন মেনে চলি, আজ থেকেই দুর্ঘটনা অর্ধেক কমে যাবে। ডিএমপি কমিশনার, মেয়রের ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে আসুন আমরা সবাই আজ থেকেই আইন মেনে চলি।

লেখক : হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়