শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্র সরে এলে বিশ্বরাজনীতিতে নেতৃত্ব দেবে কে: বাইডেন ◈ মিয়ানমার সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠালো বিজিবি ◈ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ◈ বর্ধিত ভাড়ায় ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু ◈ বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ◈ মা হিসেবে পূর্ণ অভিভাবকত্ব পেয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখালেন অভিনেত্রী বাঁধন ◈ আরও তিন মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক ◈ সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ ◈ তাপপ্রবাহে উচ্চ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিশুরা,  বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ ইউনিসেফের ◈ মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয়রা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের 

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৭:২৫ সকাল
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৯, ০৭:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অর্থমন্ত্রীর জিজ্ঞাসা : ঘুষ কেমনে খায়? আমার শরীরে ইনজেকশন দিয়েও ঘুষ খাওয়াতে পারবেন না!

ডেস্ক রিপোর্ট  : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সোনালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করেন—আপনারা কি ঘুষ খান? উপস্থিত কর্মকর্তাদের অনেকেই চুপ থাকেন। কিছু কর্মকর্তা না বলে আওয়াজ তোলেন। অর্থমন্ত্রী আবারো জানতে চান, ঘুষ কেমনে খায়? আমার শরীরে ইনজেকশন দিয়েও ঘুষ খাওয়াতে পারবেন না।

গতকাল রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা একে অন্যের সততায় বিশ্বাসী। পৃথিবীতে সৎ মানুষের বড়ই অভাব। তবে এখনো সৎ মানুষের সংখ্যাই বেশি। না হলে পৃথিবী অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। তিনি ব্যাংকারদের কাছে জানতে চান—আমি কি আপনাদের বিশ্বাস করতে পারি? উপস্থিত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা হ্যাঁ বলে জবাব দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর ‘এখানে আপনার একটি স্বপ্ন আছে’—এ ট্যাগ লাইন দিয়েছিলাম। এ স্বপ্নের কোনো শেষ নেই। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ থেকে ৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পর আরেকটি ট্যাগ লাইন দিয়েছিলাম। সেটি হলো ‘সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’। আমি অনেক সময় নিয়ে এ ট্যাগ লাইন দুটি নির্ধারণ করেছিলাম। এবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য ‘আমরা আপনার সততায় বিশ্বাসী’—এ বাক্যটি ট্যাগ লাইন নির্ধারণ করা হয়েছে।

রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) সম্মেলন কক্ষে সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল মকবুল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ্ আল্ মাসুদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হিসেবে সোনালীর ব্র্যান্ড ইমেজ আছে। এটি আইকনিক ব্যাংক। এজন্য সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাদের দায়িত্বও অনেক।

সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালীন সময় স্মরণ করে গভর্নর বলেন, আমি সোনালী ব্যাংকেই ছিলাম। শাপলা চত্বর পার হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়েছি। ২০১৮ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে। কিন্তু প্রভিশন ঘাটতি, অবলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায়, খেলাপি ঋণের দিক থেকে তেমন উন্নতি হয়নি। বিদায়ী বছরে সোনালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিল করেছে। এর পরও খেলাপি ঋণ আশানুরূপ কমেনি। ব্যাংকের কোনো ঋণ খেলাপি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা না করে বিকল্প মাধ্যমে আদায়ে জোর দিতে হবে। ঋণ যাতে কেন্দ্রীভূত না হয়ে যায়, সেটি লক্ষ রাখতে হবে।

সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে বলে উল্লেখ করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংক অনেক বড় ব্যাংক। আমিও এ ব্যাংকের গ্রাহক। উন্নত দেশগুলোয় সব গ্রাহককে ব্যাংকাররা সমান চোখে দেখে। আমাদেরকেও ছোট-বড় সব গ্রাহককে সমান মূল্যায়ন করতে হবে। আমি আশা করি, সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা ভালো সেবা দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হচ্ছে। আপনাদেরও সে পথে হাঁটতে হবে। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। ব্যাংকের অভ্যন্তরে সুশাসন কার্যকর হোক। বর্তমানে সুশাসনের ঘাটতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এটি হওয়াই স্বাভাবিক।

একটি বিধ্বস্ত পরিস্থিতি থেকে সোনালী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল মকবুল। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে পুরো ব্যাংকিং খাতে আমানতের সংকট থাকলেও সোনালী ব্যাংকে তা হয়নি। অনেকে হয়তো বলবেন, রাষ্ট্রের গ্যারান্টি থাকায় এটি হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত বাস্তবতা তা নয়। কারণ রাষ্ট্র মালিকানাধীন অন্য ব্যাংকগুলোও সোনালী ব্যাংকের কাছ থেকে আমানত ধার নেয়ার জন্য শরণাপন্ন হচ্ছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা নিয়ে সোনালী ব্যাংক সতর্কতার সঙ্গে পথ চলছে জানিয়ে আশরাফুল মকবুল বলেন, আমরা বড় ঋণ অনুমোদন না করে এসএমই খাতকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

স্বাগত বক্তব্যে সোনালী ব্যাংক এমডি মো. ওবায়েদ উল্লাহ্ আল্ মাসুদ বলেন, ২০১৬ সালে সোনালী ব্যাংকের এমডি পদে দায়িত্ব নেয়ার সময় সব কিছুতেই সংকট ছিল। মূলধন ঘাটতি, সঞ্চিতি ঘাটতি, খেলাপি ঋণের হারসহ সবকিছুতেই ব্যাংকে একটি বিপর্যস্ত পরিস্থিতি ছিল। দুই বছরের মধ্যে আমরা তা কাটিয়ে উঠেছি। ২০১৯ সালকে ‘অর্জন সংহত করার বছর’ ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করছি, এ বছর ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি পরিচালন মুনাফা করে সোনালী ব্যাংক দেশের শীর্ষ ব্যাংকের স্থান ফিরে পাবে।

উৎসঃ বণিকবার্তা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়