শিরোনাম
◈ ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় নিহতদের ৬ জন একই পরিবারের ◈ গাজীপুরের টঙ্গি বাজারে আলুর গুদামে আগুন ◈ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনোয়ারুল হক মারা গেছেন ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ দুই এক পশলা বৃষ্টি হলেও তাপদাহ আরো তীব্র হতে পারে  ◈ এথেন্স সম্মেলন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ◈ কেএনএফ চাইলে আবারও আলোচনায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে: র‌্যাবের ডিজি ◈ ওবায়দুল কাদেরের হৃদয় দুর্বল, তাই বেশি অবান্তর কথা বলেন: রিজভী ◈ মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে: অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০৮:২৫ সকাল
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০৮:২৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজধানীতে পুলিশি হেনস্তার শিকার সাংবাদিক

আহমেদ শাহেদ : পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদককে হেনস্তা করেছে পুলিশ। গুলশান-১ থেকে বাড্ডার দিকে যেতে গুদারাঘাট সংলগ্ন লিংক রোডের চেক পোস্টে ২৪ মার্চ রবিবার সন্ধ্যায় এমন ঘটনা ঘটে। কেবল তাই নয়, মটরসাইকেল তল্লাশি সময়কালীন ছবি তুললে সেগুলো ডিলিট করাতে বাধ্য করে পুলিশ। অন্যথায় তাকে আটক করারও হুমকি দেন ঘটনাস্থলে দায়িত্বপালনকারী পুলিশের এসআই মাসুম ও কন্সটেবল মমিন।

এক পর্যায়ে এই সাংবাদিকের হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশের এসআই মাসুম। তার সঙ্গে পুলিশের এপিবিএন’র ইউনিফর্ম পরিহিত কন্সটেবল মমিন তেড়ে এসে কাজী ফয়সালকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করতে উদ্যত হন। এমন পরিস্থিতে ঘটনাস্থলে বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী জড়ো হয়ে ওই সাংবাদিককে পুলিশের কবল থেকে রক্ষা করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সাংবাদিক কাজী ফয়সাল বলেন, ‘গুলশানের ডিপ্লোমেটিক জোনে নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে, এমন তথ্য পেয়েই বিকেলে ওই চেকপোস্টের তল্লাশীর ছবি তুলতে যাই। তখন ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা বললেন, আমাদের ইনচার্জের অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা যাবে না। তখন ইনচার্জ এসআই মাসুমের কাছে ছবি তোলার সুযোগ দেওয়ার জন্য বলি।

এ সময় মাসুম বলেন, আপনি এখানে ছবি তুলে কী করবেন! আপনি অন্য কোনো চেকপোস্টে গিয়ে ছবি তুলেন, না হলে পরে আসেন। পরে সন্ধ্যার দিকে ওই চেকপোস্টের ছবি তোলামাত্র এসআই মাসুম ও মমিন তেড়ে আসেন। এসআই মাসুম উত্তেজিত কণ্ঠে সাংবাদিক ফয়সালকে বলেন- আপনি কার অনুমতি নিয়ে ছবি তুললেন? অনুমতি নিলেন না কেনো? আপনার এতো সাহস কেনো?

একই সময়ে কন্সটেবল মমিন বলেন, আপনি ভুয়া সাংবাদিক, অনুমতি না নিয়ে ছবি তুলেছেন। আপনাকে আটক করবো এখনই।

এ সময় কাজী ফয়সাল বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমি তাদের পেশাগত পরিচয়পত্র দেখাই এবং বলি আপনারা কেন আমাকে আটক করবেন? আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করলাম মাত্র। আপনারা মটর সাইকেলের দুই আরোহীকে তল্লাশি করছেন এখানে এমন কী গোপনীয়তা রয়েছে, যে ছবি তোলায় আপনারা উত্তেজিত হচ্ছেন? এমন সময়েই কন্সটেবল মমিন ভিজিটিং কার্ড চান। পরে তাকে ভিজিটিং কার্ড দেওয়া হয়।

তখন কন্সটেবল তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার নাম মমিন। এমন সময়ে চিৎকার দিয়ে মমিন বলেন, আপনি আমার নাম জানতে চাইলেন কেন? আপনি তো ভুয়া সাংবাদিক! আপনাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাবো। একই সময়ে এসআই মাসুম হুমকির সুরে বলেন, ওই ভুয়া সাংবাদিক, আপনি ভালোয় ভালো দ্রুত এখান থেকে চলে যান। না হলে আমরা আপনাকে আটক করে নিয়ে যাবো, তার আগে গণধোলাই খাওয়াবো।

আমাদের চেকপোস্টে আমরা তল্লাশি করি, কী করি, না করি এটি আমাদের বিষয়। আপনি অনুমতি ছাড়া ছবি তুলতে পারেন না। আপনি দাঁড়ান আপনাকে আটক করবো।

ভূক্তভোগী সাংবাদিক বলেন, এই বলেই এসআই মাসুম ও কন্সটেবল মমিন আমাকে ঘিরে রেখে মোবাইল নিয়ে ছবি ডিলিট করতে চায়। পরে এসআই আঙুল উচিয়ে বলতে থাকেন- আপনি মোবাইল বের করে ছবিগুলো ডিলিট করবেন। অন্যথায় যেকোন মামলায় আপনাকে নিয়ে যাবো চিন্তাও করতে পারবেন না!

ফয়সাল বলেন, এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে ওই এসআই’র সামনে ছবিগুলো ডিলিট করে দিই। ওই সময়ে আমি খুবই অসহায় হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করি! বুক ফেটে কান্না পাচ্ছিলো। মনে প্রশ্ন জাগছিলো- চার দেয়ালের মাঝে নয়, গোপন কোনো স্থানে নয়, পাবলিক প্লেসে একটি তল্লাশি চৌকির ছবি তোলায় এমন কি অপরাধ হলো যে, পুলিশ আমাকে হেনস্তা করলো! উত্তর খুঁজে পাই না পুলিশ কেন আমাকে লাঞ্চিত করল? আমিতো পুলিশের ঘুষ নেওয়ার কোনো ছবি তুলতে যাইনি! আমিতো গোপন কক্ষের লেনদেনের কোনো ছবি তুলতে যাইনি! নাকি সাংবাদিক পরিচয় শুনতেই তাদের মাথায় রক্ত উঠে গেল? তাদের সঙ্গে তো আমার কোনো পূর্ব শত্রুতা ছিল না! চারদিকে অনেকগুলো মানুষের সামনে কেন তারা আমাকে হেনস্তা, অপমানিত আর লাঞ্চিত করল? এসব কথা ভাবতে ভাবতেই আমি আমার অফিসকে বিষয়টি জানাই। পাশাপাশি এখান থেকে উদ্ধার হওয়ার জন্য ম্যাসেজ পাঠিয়ে সাংবাদিক সহকর্মীদের সহযোগীতা চাই। পরে সহকর্মীরা এসে আমাকে উদ্ধার করে। তারা আসা মাত্রই দু:ব্যবহার করা পুলিশ সদস্যদের আচরণের পরিবর্তণ ঘটে। তবে এখনো আমি ভাবছি, আমার সঙ্গে কেন এমন আচরণ করল পুলিশ?

বিষয়টি গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিককে জানালে তিনি বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক, এটি তদন্ত করে দেখবো। যদি কোনো পুলিশ সদস্য দোষি সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়