যতীন সরকার : স্বাধীনতার ৪৬ বছরে আমাদের অর্জন অনেক, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের কৃষিতে অর্জন যথেষ্ট হয়েছে। ৭ কোটি লোক থাকতে যেখানে অভাব মন্দা ছিল, এখন ১৬ কোটি লোকের দেশেও সেটি নেই। বরং আমরা রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছি। প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। আমাদের কৃষক সন্তানরাই এই অর্জনের বড় কারিগর। তারা অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অর্জন করছে বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ করছে আমাদের অর্থনীতি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কাক্সিক্ষত উন্নতির দিকে।
সমাজ এগিয়ে গেলেও, সমৃদ্ধ হলেও এখানে যে পরিমাণে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, সেটা স্বাধীনতার মূল্যবোধের সম্পূর্ণ বিরোধী। আজকে ব্যবসায়ীদের এত প্রাধান্য হয়ে গেছে এবং সেই ব্যবসাও আসলে লুটপাটতন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না। এ সমস্ত জিনিসগুলোর সূত্র ধরেই তৈরি হয়েছে ধর্মতন্ত্রে জঙ্গিবাদ এবং এটাকে কোনোমতেই সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। এই সমস্ত জিনিসগুলো হচ্ছে আমাদের স্বাধীন দেশে নেতিবাচক দিক। এভাবেই আমি অর্জন এবং ব্যর্থতা বা অপ্রাপ্তিকে দেখি।
বাংলাদেশের সামনে অপার সম্ভাবনা, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। ভবিষ্যতে উজ্জ্বলের বিষয়ে আমরা অনেক বলতে পারি। কিন্তু এই যে নেতিবাচক দিকগুলো আমি উল্লেখ্য করলাম। সেই নেতিবাচক দিকগুলোর বিরুদ্ধে যদি একটি প্রচ- গণ-আন্দোলন সৃষ্টি করা না যায় বা সামাজিক আন্দোলন গড়ে না তোলা যায়, তাহলে আমাদের সম্ভাবনা সুদূর পরাহত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের অগ্রগতি ও আগামীর চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছেÑ এই যে লুটপাটতান্ত্রিক বিস্তার বৈষম্যের বিস্তার। এটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে আমি মনে করি। এটিকে প্রতিহত করতে হবে।
পরিচিতি: গবেষক ও শিক্ষাবিদ
আপনার মতামত লিখুন :