শিরোনাম
◈ নির্বাচনের মাঝেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শনিবার ঢাকা আসছেন ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০২:১৫ রাত
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০২:১৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাদারীপুরে ভোটার উপস্থিতি কম, শন্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোট গ্রহণ

 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩য় পর্বে মাদারীপুরে দুটি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। তবে নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় কোন সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।

মাদারীপুর দুটি উপজেলার ৩০টি ভোট কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব কয়টি ভোট কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েনি। প্রতিটি কেন্দ্রেই তিন-চার জন করে ভোটার চোখে পড়ে। তবে দুপুরের পরে রাজৈর উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি চোখে পড়ে। দুপুর ৩টার পড়ে কোন কেন্দ্রেই ভোটার চোখে পড়েনি। বেশির ভাগ কেন্দ্রে নির্বাচন পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের অলস সময় পার করতে দেখা যায়। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরাও ছিলেন কিছুটা গা ছাড়া।

সকাল ৯টার দিকে কালকিনি উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়েল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় চারটি বুথে একজনও ভোটার নেই। একই উপজেলার কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও একই চিত্র। সকাল সাড়ে ১১ টায় দিকে একই উপজেলার সূর্যমনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় এখানেও কোন ভোটার নেই।

এই কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবু তালেব হাওলাদার বলেন, ‘এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা প্রার্থী সবার এজেন্টিই আছে। ভোটার কম, তবে দুপুরের পরে কিছু ভোটার আসবে ভোট দিতে। এছাড়া আমাদের এই কেন্দ্রে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ২১৭টি ভোট গ্রহণ হয়েছে। কেন্দ্রে সার্বিক অবস্থা খুব ভালো। প্রশাসন ও পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছেন।’

সূর্যমনি এলাকার ভোটার জায়নাল হোসেন বলেন, ‘সকালে দোকান করেছি। দুপুরের পরে ভাবছি ভোট দিব। তবে ভোট দেয়া নেই আমাদের তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। মানুষজন এখন তো দেখি আর আগের মতো কেন্দ্রে এসে ভোট দেয় না। তাই ভোট দেব কিনা এখনো অনিশ্চিত।’

দুপুর ১টার দিকে কালকিনি উপজেলার মধ্য লক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে কোন ভোটার দেখা যায়নি। এই কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিগত দিনের ভোটের ইতিহাসের কারণে আজ ভোটের এই চিত্র। মানুষ ভোট প্রয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। তাই ভোটার উপস্থিতি কম দেখা যাচ্ছে।

শফিকুল ইসলাম নামে এক ভোটার বলেন, ‘মানুষ এখন তার কর্মযজ্ঞ নিয়ে ব্যস্ত। ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ নেই। কারণ ভোট মানেই এখন তারা মনে হয় সহিংসতা।’

এদিকে রাজৈর উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মহসিন মিয়া দাবি করেছেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন কেন্দ্র দখল করেছে। তারা জাল ভোট দিচ্ছে। প্রশাসন ও পুলিশ তাদের জাল ভোট প্রদানে সহযোগিতা করছে। এর ফলে সাধারণ অনেক ভোটারই ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি।

বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট পপুলার হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নেই। পাশের সরমঙ্গল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রর চিত্রও একই । তবে কিছুক্ষণ পরেই এই কেন্দ্রে দুইপক্ষের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

দুপুর ২টার দিকে একই উপজেলার রাজন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, এই কেন্দ্রে কয়েকজন স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ভোটে লাইনে দাড়িয়ে আছে। তাদের নাম পরিচয় ও ছবি তুলতে গেলেই তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এই কেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কৃষ্ণ কান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘জাল ভোট দিতে আসা কয়েকজন স্কুলছাত্রকে আমি নিজে দুইবার তাড়িয়ে দিয়েছি। এরপরে আবার তারা কি করে, কোন সাহসে আসে তা আমি দেখছি। তবে আমাদের পোলিং অফিসারদের বলা হয়েছে যে ছবির সাথে না মিললে সে ভোট দিতে পারবে না।’

দুপুর ৩টার দিকে ইশিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় এখানে কোন ভোটার নেই। এরপাশে লুন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই চিত্র।

জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সূত্র জানায়, রাজৈর উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান, ৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৩ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। আর কালকিনি উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। জেলার এ দুটি উপজেলার ১শ’ ৬২টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮শ’ ১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯শ’ ৬৫ জন, আর পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮শ’ ৪৫ জন।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার জানান, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ৮শ’ ৭ জন পুলিশ, ৩৫ জন র‌্যাব সদস্য, ১ হাজার ৯শ’ ৪৪ জন আনসার সদস্যসহ ৪ প্লাটুন বিজিবি নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপালন করছে।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘দুটি উপজেলার ১৬২টি কেন্দ্রের মধ্যে রাজৈর উপজেলার বাটিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রেটি সাময়িক স্থগিত করা হয়। এই কেন্দ্রে একটি বেলট বাক্সে জাল ভোট দেয়াসহ আপত্তিকর কিছু ঘটনা ঘটে। এছাড়া পুরো নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়