ইসমাঈল ইমু : দশ মাস ধরে নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়েছেন মা আজুফা বেগম (৪০) ও বাবা ছমিরউদ্দিন (৫৫)। গতকাল শনিার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া বাদাপাড়া গ্রামের এই দম্পতি তাদের ছেলের সন্ধান চান। তাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেরপুরের পাকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা আলহাজ মো. আবুল কালাম আজাদ।
লিখিত কক্তব্যে তারা জানান, ফজলু মিয়া (২৫) তাদের একমাত্র উপার্জক্ষম ছেলে। সে গাজীপুর জেলার কোনাবাড়িতে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর হাজী শফিউদ্দিন ওরফে ল্যাংড়া শফির ছেলে শাহীনুর ইসলাম দীপুর (৩০) ইন্টারনেট ব্যবসা দেখা শোনা করতো। গত বছরের ২৪ মে রাতে শাহীনুর মোবাইল ফোনে বাসা থেকে ডেকে নেয় দিপুকে। এরপর দীর্ঘ ১০ মাসেও ফজলুর সন্ধান মিলেনি। ফজলুর মান গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করলে ওই মামলার তদন্তভার পায় মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ি থানা। কোনাবাড়ি থানার ওসি এমদাদ হোসেন অপহরণ মামলার আসামি গ্রেফতার না করে থানায় ডেকে এনে খাতির দারি করছেন। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি শফিকুল ইসলাম শফি ওরফে ল্যাংড়া শফির সঙ্গে থানা কম্পাউন্ডে অন্তরঙ্গ আলোচনা ও একসঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। একই গাড়িতে করে তারা এলাকায় ঘোরাফেরাও করেন।
তারা আরও বলেন, আমাদের আশঙ্কা ফজলুকে মারপিট করে হত্যার পর লাশ গুম করে রাখা হয়েছে। আমাদের করা মামলার আসামিরা হলেন, কোনাবাড়ি থানার (সাবেক জয়দেবপুর) বাইমাইল এলাকার শফিকুল ইসলাম শফির ছেলে শাহিনূর ইসলাম দিপু (৩০) ও তারভাই মো. ঝিকু মিয়া (২৫), তাদের মা মোছা. বাছি বেগম (৫০), দীপুর বাবা শফিকুল ইসলাম শফি (৫৫), তাদের দোকানের কর্মচারি উজ্জল (৩০), মস্তফা (৩০) ও সাইফুল (৩৫)। এদের মধ্যে মামলার ৫ নম্বর আসামি উজ্জলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। উজ্জলকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়। তাকে রিমান্ডে নিয়ে পিটিয়ে তারকান্না মোবাইল ফোনে তার বাবাকে শুনিয়ে আড়াই লাখ টাকা নেয় বলে শুনেছি। ওই টাকার শোকে আসামি উজ্জলের বাবাহার্ট অ্যাটাকে মারাযান।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ছেলের অপহরণ মামলা ধামা-চাপা দিতে ল্যাংড়া শফি ও তার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছেন কোনাবাড়ি থানার ওসি। এছাড়া শফির ভাতিজার শোরুম থেকে একটি গাড়িও নিয়েছেন। শফির ইউনিক নামে ইটভাটা থেকে ইট নিয়ে মাদারিপুরে বিল্ডিং করেছেন। শফি ও তার ছেলেরা কয়েক দফায় বাদীর সঙ্গে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করে। তারা আমাদেরকে কিছু টাকা দিয়ে মামলা তুলে নিতে বলে। কিন্তু আমরা কিছুই চাই না। আমরা শুধু আমার ছেলেকে ফেরত চাই। ছেলেকে উদ্ধারের বিষয় তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজি, র্যাবের ডিজি, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :